অভিষেক টেস্টে বদলি ফিল্ডার হিসেবে নিয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের ক্যাচ। ওয়ানডেতে দেশের পক্ষে তৃতীয় সেঞ্চুরিয়ান তিনি। ২০০৪ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের অধিনায়কও ছিলেন রাজিন সালেহ। সিলেটের সাবেক এই ক্রিকেটার বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাম্প্রতিক টালমাটাল অবস্থা আর বিশ্বকাপ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন রাহেনুর ইসলামের সঙ্গে।
প্রশ্ন : বিশ্বকাপের বাকি আর কয়েক মাস। এমন সময় ওয়ানডে অধিনায়কের অবসর ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে ফিরে আসা নিয়ে ঝড় বয়ে গেছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। কিভাবে দেখছেন ব্যাপারটা?
রাজিন সালেহ : এটা অপ্রত্যাশিত ছিল। আমি কল্পনাও করিনি সিরিজের মাঝপথে অবসরের ঘোষণা দেবে তামিম ইকবাল।
স্বস্তির হচ্ছে, ব্যাপারটা মিটে গেছে। যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। এখন সব ভুলে বিশ্বকাপের পরিকল্পনা করা উচিত।
প্রশ্ন : সেই পরিকল্পনায় কি অধিনায়ক হিসেবে তামিম থাকবেন? চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডের পর বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস জানিয়েছেন, লন্ডনে তামিমের চিকিৎসা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে নেতৃত্ব নিয়ে।
রাজিন : তামিম কতটা ফিট এটা আমি জানি না। ও যদি ফিট হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যায় তাহলে আমার মতে অধিনায়ক করা উচিত তামিমকেই। এত অল্প সময়ে নতুন অধিনায়ক নিয়োগ দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। নতুন অধিনায়ক এসে গুছিয়ে উঠতেই সময় নেবে অনেকখানি। বিশ্বকাপের আগে এর দরকার নেই।
তামিমের না থাকার প্রভাবেই কিন্তু বাংলাদেশ আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেটা হেরেছিল। এটা ভুলে যাওয়া উচিত হবে না।
প্রশ্ন : সেই হারের ধকল সামলে তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ প্রবলভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজে কি জয়টা আত্মবিশ্বাস জোগাবে?
রাজিন : যেকোনো জয়ই আত্মবিশ্বাস জোগায়। আমি মনে করি সিলেটের কন্ডিশনে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশই ফেভারিট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এই মাঠে দুটি ওয়ানডেতে অনেক বড় ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এটা স্পিনিং উইকেট না যে রশিদ খান, মুজিব উর রহমানরা ছড়ি ঘুরিয়ে চলে যাবে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে তো ১০ উইকেটই নিয়েছিল আমাদের পেসাররা।
প্রশ্ন : আফগানিস্তানের কয়েকজন বিগ হিটার আছে। বিশ্বমানের বোলারও আছে কয়েকজন?
রাজিন : আমাদেরও সাকিব, লিটন, হৃদয়, শান্ত, তাসকিনরা আছে। আমার মতে এরা বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। এ জন্যই দেশের মাটিতে আমি বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছি, যদিও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটা আমরা খুব বেশি ভালো খেলি না।
প্রশ্ন : আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন এবাদত হোসেন। চোটের জন্য এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে নেই তিনি।
রাজিন : পেসাররা ইনজুরিতে পড়বেই। আমাদের এই ডিপার্টমেন্টটা অনেক উন্নতি করেছে। চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডেতে মুস্তাফিজ, হাসান মাহমুদকে বিশ্রাম দিয়েও জিতেছি আমরা। তবে সিলেটের ছেলে হিসেবে চাইছিলাম, এবাদতসহ আমাদের বিভাগের আরো কয়েকজন একসঙ্গে খেলুক জাতীয় দলে।
প্রশ্ন : ২০২২ সালে আফগানিস্তান যখন বাংলাদেশে এসেছিল তখন আপনি ছিলেন ফিল্ডিং কোচ।
রাজিন : আমার সৌভাগ্য যে বিসিবি আমাকে যোগ্য মনে করে নিয়োগ দিয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ পর্যন্ত আমি দায়িত্বে ছিলাম। কয়েক দিন আগে আমি এ দলের হয়ে কাজ করেছি। এখন দায়িত্বে বিদেশিরা। তাতে আমার আপত্তি নেই। তবে একটা জিনিস বলতে চাই, আমরা দেশি কোচরাও কিন্তু যোগ্য। অথচ দায়িত্ব পেলে আমরা যে সম্মানী পাই সেটা হতাশার।
প্রশ্ন : কী রকম?
রাজিন : বিতর্ক তৈরি করতে চাই না। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আমি দায়িত্বে থাকার সময় বেতন পেয়েছি দিন হিসাবে। অর্থাৎ যত দিন কাজ তত দিন বেতন। মাসে হয়তো ৭৫ হাজার টাকার মতো পেয়েছিলাম। অথচ বিদেশিদের আনা হচ্ছে মোটা অঙ্কের বেতনে। এ ক্ষেত্রে একটা সমতা থাকা উচিত।