ব্রাজিলের ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থকেরা দেশটির কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্টে ঢুকে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক পেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা যেভাবে ক্যাপিটলে হামলা ও তাণ্ডব চালিয়েছিল, ব্রাজিলে বলসোনারো সমর্থকদের এই তাণ্ডব অনেকটা তেমনই।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় রোববার ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় বলসোনারোর উগ্র সমর্থকেরা দেশটির জাতীয় রংয়ের পোশাক পরে ও জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে পুলিশি বাধা অমান্য করে দেশটির কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবনে ঢুকে পড়ে এবং ব্যাপক ভাঙচুর চালায়।
ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় দেশটির কংগ্রেস, সুপ্রিম কোর্ট ও প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ কাছাকাছি স্থানেই অবস্থিত। সেখানে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে দিয়েই ভেতরে ঢুকে পড়ে বলসোনারো সমর্থকদের হলুদ স্রোত।
প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এ ঘটনায় প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ ইতোমধ্যে কংগ্রেস ভবন, প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ ও সুপ্রিম কোর্ট ভবন থেকে থেকে হামলাকারীদের সরিয়ে দিয়ে এই ভবনগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে ভবনগুলো ছেড়ে যাওয়ার আগে সেখানে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় হামলাকারীরা। এ ঘটনায় অন্তত ২০০ দাঙ্গাবাজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা হামলাকারীদের ‘ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
সাও পাওলো রাজ্যে একটি সরকারি সফরের সময় এক সংবাদ সম্মেলনে লুলা বলেন, ‘ধ্বংসজ্ঞ চালানো এই বর্বরদের, যাদের আমরা বলতে পারি… ধর্মান্ধ ফ্যাসিস্ট, তারা এমন কাজ করেছে যা এই দেশের ইতিহাসে আগে কখনো হয়নি।’
সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সমস্ত লোকজন, যারা এটি করেছে, তাদের খুঁজে বের করা হবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে।’
ব্রাজিলের বিচারমন্ত্রী ফ্ল্যাভিও ডিনো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘এটি সন্ত্রাস, এটি একটি অভ্যুত্থান। আমরা নিশ্চিত যে জনসংখ্যার একটি বিশাল অংশই চায় না এই অন্ধকার আমাদের গ্রাস করুক।’
তিনি ওই অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের দোষারোপ করেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ডাররা রোববারের বিক্ষোভের সময় দায়িত্ব পালনে ‘অবহেলা’ করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গত ৩০ অক্টোবর ব্রাজিলের অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকে দেশটির রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছে।