আল্লাহ বলেন, ‘সে (ফেরাউন) বলল, হে মুসা, তুমি কি আমার কাছে এসেছ তোমার জাদু দিয়ে আমাদেরকে আমাদের দেশ থেকে বহিষ্কার করতে? আমরাও অবশ্যই তোমার কাছে উপস্থিত করব এর অনুরূপ জাদু। সুতরাং আমাদের ও তোমার মধ্যে নির্ধারণ করো এক নির্দিষ্ট সময়—এক মধ্যবর্তী স্থানে, যার ব্যতিক্রম তুমিও করবে না, আমরাও করব না।’ (সুরা : ত্বহা, আয়াত : ৫৭-৫৮)
তাফসির : আগের আয়াতে বলা হয়েছিল, ফেরাউন অসংখ্য অলৌকিক নিদর্শন দেখেও সত্য প্রত্যাখ্যান করেছে। আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, ফেরাউন মুসা (আ.)-এর মাধ্যমে প্রকাশিত অলৌকিক নিদর্শন দেখে এগুলোকে জাদু জ্ঞান করেছে। সে চিন্তা করেছে, যেহেতু এগুলো জাদু, তাই জাদুর বিপরীতে জাদু উপস্থিত করা হলে জয় লাভ করা সম্ভব। এমন চিন্তা থেকে ফেরাউন তৎকালীন সময়ের জাদুকরদের সহযোগিতা নিয়ে মুসা (আ.)-এর মোকাবেলা করার চেষ্টা করে।
জাদু বলতে এখানে বোঝানো হয়েছে লাঠি ও সাদা হাতকে। মুসা (আ.)-এর মুজেজা দেখে ফেরাউন দিশাহারা হয়ে পড়েছিল। তার ভেতর রাজ্য হারানোর ভয় কাজ করে। তাকে রাজ্য হারানোর ভীতি পেয়ে বসে। একটি বাক্য থেকে এই আন্দাজ করা যায় যে সে বলেছিল, ‘মুসা, তোমার জাদুর জোরে তুমি আমাদের দেশ থেকে আমাদের বের করে দিতে চাও!’
তাই ভীত ও প্রকম্পিত হয়ে ফেরাউন রাজ্যের জাদুকরদের দিয়ে মুসা (আ.)-এর সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেরাউন পরিষ্কার সমতল ভূমিতে এই লড়াইয়ের আয়োজন করে, যেখানে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সবাই সহজেই দেখতে পারে।
মুসা (আ.) মনেপ্রাণে এটাই চাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, এ জন্য কোনো পৃথক দিন ও স্থান নির্ধারণ করার দরকার নেই। উৎসবের দিন কাছেই এসে গেছে। সারা দেশের লোক এদিন রাজধানীতে চলে আসবে। সেদিন যেখানে জাতীয় মেলা অনুষ্ঠিত হবে সেই ময়দানেই এই প্রতিযোগিতা হবে। গোটা জাতি এ প্রতিযোগিতা দেখবে। আর সময়টাও এমন হতে হবে যখন দিনের আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে, যাতে কারো সন্দেহ করার কোনো সুযোগ না থাকে।