পুকুরের পানিতে মাহিদুল ইসলাম নামে দেড় বছরের এক শিশুর লাশ পাওয়া গেছে। শিশুর মায়ের দাবি, সে পানি ডুবে মারা গেছে। অন্যদিকে বাবা এটিকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দাবি করছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের একটি পুকুর থেকে শিশু মাহিদুলের লাশ উদ্ধার হয়। মাহিদুলের নানার বাড়ি বিটঘর। কয়েক মাস ধরে সে মায়ের সঙ্গে এখানেই থাকতো। সবার অজান্তে পানিতে ডুবে গেলে পরে তার লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শিশু মাহিদুল ইসলাম উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের মো. বশির উদ্দিনের ছেলে। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. বশির উদ্দিনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বিটঘর গ্রামের মো. নূরু মিয়ার মেয়ে শিউলি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল। প্রায় চার মাস আগে শিউলি তার শিশু সন্তান মাহিদুলকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
শিশুর বাবা বশির উদ্দিন দাবি করেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত চার মাস আগে শিশুপুত্র মাহিদুলকে নিয়ে তার স্ত্রী বাবার বাড়িতে চলে যায়। তাকে বাড়ি ফেরানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হলেও সে আর ফিরেনি। শুক্রবার সন্ধ্যায় বশির খবর পান তার ছেলে মাহিদুল পানিতে ডুবে মারা গেছে। শিশু মাহিদুলকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তবে শিশুর মা শিউলি আক্তার জানান, বিয়ের পর থেকেই স্বামী বশির উদ্দিন তার ওপর অত্যাচার, নির্যাতন করতেন। বশিরের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন সময় বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে বশিরকে দিয়েছেন। তার অত্যাচারে চার মাস আগে তিনি শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন। শুক্রবার বিকেলে শিশু মাহিদুল সবার অজান্তে খেলা করতে গিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরের পানিতে পড়ে মারা যায়।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসলাম হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। যেহেতু মৃত্যু নিয়ে শিশুর বাবার মৌখিক অভিযোগ রয়েছে সে কারণে লাশের ময়না তদন্ত করানো হয়েছে।