২০১৮ সালের ১৫ই এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরু হয়। ২০১৭ সালের ১৯শে মার্চ এ মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। মামলায় তখন চারজন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে খালেক মণ্ডল ও খান রোকনুজ্জামান কারাবন্দি। বাকি দুইজন মারা গেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। যার মধ্যে ৬ জনকে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগ ছিলো।
এরআগে, গত বছরের নভেম্বরে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে যেকোন দিন মামলার রায় দেয়ার জন্য নির্ধারণ করে আদালত। প্রসিকিউশন ও আসামিক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মামলাটি রায়ের অপেক্ষায় রাখেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলা পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। খালেক মণ্ডলের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার। আর পলাতক আসামি খান রোকনুজ্জামানের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন বলেন, মামলাটি ২০১৫ সালের। পরে ২০১৮ সালের ৫ মার্চ অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল।
চার আসামির মধ্যে আব্দুল্লাহ আল বাকী এবং জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কা খান নামের দুই আসামি বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান।
বাকি দুই আসামির মধ্যে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির ও সাতক্ষীরা সদর আসনের সাবেক এমপি আব্দুল খালেক মণ্ডলকে তদন্তের সময়ই গ্রেপ্তার করা হয়। আর খান রোকনুজ্জামান এখনও পলাতক।
মুক্তিযুদ্ধের সময় সাতক্ষীরা এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতনের মত মানবতাবিরোধী অপরাধের ছয়টি অভিযোগ আনা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
চূড়ান্ত যুক্তিতর্কে প্রসিকিউশন দুই আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে। আর আসামি পক্ষ অভিযোগ থেকে আসামিদের খালাস চেয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় পাঁচ ব্যক্তিকে জবাই ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর আসনে জামায়াতের সাবেক সাংসদ আব্দুল খালেক মণ্ডলসহ নয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২ জুলাই মামলা করেন সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রুস্তম আলী গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী। পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
এ মামলার তদন্ত শুরু হয় ২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট। প্রায় দেড় বছর পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তদন্ত সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হলেও যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রসিকিউশন ছয়টি অভিযোগ চূড়ান্ত করে।
এ মামলায় তদন্ত সংস্থা ৩৩ জনকে সাক্ষী করলেও প্রসিকিউশন তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের সাক্ষ্য নেয়।