সোমবার (১৪ই মার্চ) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হাদিসুরের মরদেহবাহী তার্কিশ এয়ারের ফ্লাইটটি পৌঁছেছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রবিবার রাতে হাদিসুরের মরদেহ দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু গত শনিবার রাতে বুখারেস্ট এয়ারপোর্টে প্রচণ্ড তুষারপাতের কারণে প্রায় শতাধিক ফ্লাইট বাতিল হয়। এর মধ্যে হাদিসুরের মরদেহ বহনকারী তার্কিশ এয়ারের নির্ধারিত ফ্লাইটও বাতিল হয়।
পরবর্তীতে ফের শিডিউল ঠিক করে রবিবার রাতে বুখারেস্ট ছাড়ে হাদিসুরের মরদেহবাহী ফ্লাইটটি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) মালিকানাধীন জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা কর্পোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। গত ২২শে ফেব্রুয়ারি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে জাহাজটি ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪শে ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার কথা ছিল জাহাজটির।
কিন্তু এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। পরবর্তীতে ২রা মার্চ বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ২৫ মিনিট ও ইউক্রেন সময় ৫টা ২৫ মিনিটে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলা হয়। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায় এবং জাহাজের তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান নিহত হন।
তবে জাহাজে থাকা বাকি ২৮ জনকে পরের দিন বৃহস্পতিবার অক্ষত অবস্থায় সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছিল বিএসসি।
এরপর হাদিসুরের মরদেহ ও বেঁচে যাওয়া ২৮ নাবিকদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে আসে একটি আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তাদের সহযোগিতায় গত শনিবার (৫ই মার্চ) দুপুরে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দর সংলগ্ন বাংকার (শেল্টার হাউজ) থেকে বেরিয়ে মালদোভার পথে যাত্রা শুরু করেন ২৮ নাবিক। পরের দিন রবিবার ৬ই মার্চ বেলা ১১টার দিকে তারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে মালদোভা হয়ে রোমানিয়া পৌঁছান।
গত বুধবার (৯ই মার্চ) ২৮ নাবিক রোমানিয়ার বুখারেস্ট বিমানবন্দর থেকে তার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন। তন্মধ্যে ১২ নাবিক বুধবার রাতেই নভো এয়ারের একটি লোকাল ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পৌঁছান।