মানসিক অসুস্থতা বর্তমান সময়ে ক্রমবর্ধমান একটি সমস্যার অন্যতম। সমীক্ষায় দেখা গেছে আমেরিকার মত উন্নয়নশীল দেশের প্রায় ৩০-৩৫% মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত। বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশেও এই সমস্যা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ছড়িয়ে পরছে। কিন্তু জন সচেতনতার অভাব এই অসুস্থতাকে সংকটপূর্ণ স্থানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
মানসিক আসুস্থতা যে কোনো বয়েসে যে কোনো মানুষের হতে পারে। এমনকি বর্তমানে শিশুদের মধ্যেও এই অসুস্থতা বর্তমানে বিরল নয়। মানসিক অসুস্থতা নির্ণয় করা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্যতম জটিল পদ্ধতিগুলোর অন্যতম। কারণ কোনো একটি নির্দিষ্ট উপসর্গ বা লক্ষণ দিয়ে কোনো এক ধরণের অসুখ নির্ণয় করা যায়না। বর্তমানে উন্নত চিকিৎসার সাহায্যে চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে এই অসুস্থতা সহজে লক্ষণীয় হয়। অন্তত পক্ষে অসুস্থ ব্যক্তির পরিবারবর্গ প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু লক্ষণ দেখে বুঝতে পারেন যে তা মানসিক অসুস্থতাকে নির্দেশ করছে।
বিজ্ঞানীরা প্রায় ২০০ রকমের বেশি মানসিক অসুস্থতা শ্রেণিবদ্ধ করেছেন। বিভিন্ন মানসিক রোগের পেছনে মূল কারণ থাকে পরিস্থিতিগত চাপ, জেনেটিক ফ্যাক্টর, জৈব রাসায়নিক পদার্থের ভারসাম্যহীনতা অথবা এর সবগুলোই। খুব সাধারণ ও পরিচিত কিছু মানসিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে উদ্বিগ্নতা, বিষণ্ণতা, ডিমেনশিয়া, বাইপোলার ডিজঅর্ডার, স্কিৎজোফ্রেনিয়া ইত্যাদি। এসবের লক্ষণ হিসেবে মেজাজ, ব্যক্তিত্ব, অভ্যাস ও সামাজিক ব্যবহারের পরিবর্তন বা তারতম্য। যেকোনো মানসিক সমস্যার মোকাবেলা করতে হলে আগে দরকার সমস্যার স্বীকৃতি দেয়া। তারও আগে প্রয়োজন সমস্যার লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা। বলা হয়, “মনে আঘাত লাগলে শরীরও কাঁদে”। যখন মনে কোনো অস্থির অবস্থার উৎপত্তি হয়, তখন তার বিভিন্ন শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায়।
আজ এই প্রতিবেদনে কিছু সাধারণ লক্ষনের সম্পর্কে বলব।
রোগের লক্ষন সমূহ:
মনে রাখতে হবে এই সব উপসর্গগুলির কোনও একটি বা অনেকগুলি মিলিতভাবে বিভিন্ন রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে। কোনও একটি উপসর্গকে একটি রোগের লক্ষণ বলে ধরা হয়না। বা কোনো সাময়িক ঘটনা প্রেক্ষিতে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পেলেও তা মানসিক রোগের ইঙ্গিত বহন করে না। লক্ষণগুলি দীর্ঘকালীন ও নির্দিষ্ট মাত্রার প্রকাশই কোনো রোগের ইঙ্গিত দেয়।
তাই বাড়ির কনিষ্ঠ থেকে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যের প্রতি প্রত্যেকের নজর দেওয়া একান্ত দরকার। যদি কখনো কেউ নিজের স্বাভাবিক ব্যবহারের পরিবর্তন করেন এবং তার নেপথ্যে কোনো সঠিক কারণ খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই মানসিক বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিতে দেরী করা উচিত নয়। মানসিক অসুস্থতা শারীরিক অসুস্থতার মতই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া এবং সর্বোপরি সঠিক চিকিৎসায় সুস্থ হওয়াও সম্ভব।