সোমবার (৮ মার্চ) রাতে বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশীদ দুলাল বরগুনা সদর থানায় অভিযোগ করেন। এতে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান নসাসহ ১৪জনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের উপর চেয়ার ছুড়ে হামলা ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার অংশ হিশেবে সোমবার বরগুনা সদর উপজেলার কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা ডাকে। হরিদ্রাবাড়িয়া এলাকায় অবস্থিত কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে সকাল ১০টায় সভা শুরু হয়। সভায় আওয়ামী লীগেরর মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধারা আমন্ত্রিত ছিলেন। ওই সভার প্রধান অতিথি ছিলেন বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ওলি উল্লাহ ওলি।
সভায় পর্যায়ক্রমে মনোনয়ন প্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থী একেএম আবুল কালাম আজাদ বাবলু, মোশাররফ হোসেন মাস্টার, এনামুল কবির মাসুদ মৃধা ও সবশেষে মনিরুজ্জামান নসা বক্তব্য তুলে ধরেণ। নসার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর শেষে আমন্ত্রিত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে সবার সম্মতিক্রমে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশীদ দুলালকে বক্তব্য দেয়ার জন্য বলা হয়। তিনি বক্তব্য দিতে দেয়ার জন্য মাইকের কাছে যাওয়ার সময় মনিরুজ্জামান নসা বাধা দেন এবং সমর্থকদের হামলার জন্য ইশারা দেন। এ সময় নসার সমর্থকরা উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে চেয়ার ছুড়ে মারা শুরু করে। এক পর্যায়ে লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া দিয়ে বর্ধিত সভা পন্ড করে সমর্থকদের নিয়ে কক্ষ ত্যাগ করে।
লিখিত অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, মনিরুজ্জমান নসা পার্শ্ববর্তী মির্জাগঞ্জ উপজেলা থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী ভাড়া করে এনেছে। এর আগেও ইউনিয়ন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিরোধীতা করেছে। নসার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গের শংকা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বজলুর রশীদ দুলাল বলেন, ‘আমি কথা বলতে শুরু করলেই নসার নির্দেশে তার সমর্থকরা আমার উপর চড়াও হয়ে চেয়ার ছুড়ে আমায় আহত করেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু থাকতে পারেনা। আমরা আওয়ামী লীগের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করছি। আমরা লাঞ্ছিত হয়েছি, দেশ মাতৃকার মুক্তির সংগ্রামের ঝাঁপিয়ে পরে বিজয়ের পতাকা ছিনিয়ে আনা বীরদের এভাবে যে লাঞ্ছিত করতে পারে নীতিগতভাবে তার আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণের ও অধিকার নাই। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করছি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মনিরুজ্জামান নসা বলেন, ‘যিনি আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তার পরিচয় কেবল মুক্তিযোদ্ধা নয়, তিনি অন্য একজন প্রার্থীর ভাই। আমি শুধুমাত্র তার বক্তব্য রাখার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলাম, কারণ সেখানে অন্য মুক্তিযোদ্ধারাও ছিলেন। এ নিয়ে সামান্য তর্ক হয় এবং সেখানে উপস্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও দুলালের ভাই মোশাররফ হোসেনের সমর্থকরাই আমার দিকে প্রথমে চেয়ার ছুড়ে মারে।’
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশীদ দুলাল বরগুনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা সেটি গ্রহন করে আদেশের জন্য কোর্টে পাঠিয়েছি। কোর্টের নির্দেশনা পেয়ে পরবর্তি আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’