কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) বর্তমানে ২১১টি ফসল নিয়ে গবেষণা চলছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বারি ১৩৪টি ফসলের ৬০২টি উচ্চ ফলনশীল রোগ প্রতিরোধক্ষম ও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশ প্রতিরোধী জাত এবং ৫৯২টি উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তিসহ মোট এক হাজার ১৯৪টি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। তার মধ্যে বর্তমান সরকারের শাসনামলে উদ্ভাবন হয়েছে ৩০৬টি উন্নত জাত এবং ৩৬৩টি প্রযুক্তি। এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে তেলবীজ, ডালশস্য, আলু, গম, সবজি, মসলা এবং ফল ফসলের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
রবিবার বারি’র কাজী বদরুদ্দোজা মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা ও কর্মসূচি প্রণয়ন কর্মশালায় এসব তথ্য জানিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘প্রযুক্তির উপযোগিতা যাচাই-বাছাই ও দেশের বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কর্মসূচি গ্রহণ করাই এ কর্মশালার প্রধান উদ্দেশ্য’।
বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- কৃষিমন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং সাংসদ মো. জাহিদ আহসান রাসেল, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সাবেক সচিব ও বিএআরসি’র প্রাক্তন নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. জহুরুল করিম অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় ‘এসডিজি-২০৩০ ও ভিশন ২০৪১ অর্জনে বারি’র গবেষণা কৌশল: একটি রোডম্যাপ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারি’র মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে কৃষি মন্ত্রণালয়ের এপিএ পুলের সদস্যবৃন্দ, বারি’র অবসরপ্রাপ্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের স্টেকহোল্ডার তথা পলিসিমেকার, জনপ্রতিনিধি, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, নার্সভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিএডিসি, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও কৃষিসংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং বারি’র বিভিন্ন বিভাগের বিজ্ঞানী-কর্মকর্তাবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। আঞ্চলিক গবেষণা পর্যালোচনা, অভ্যন্তরীণ গবেষণা পর্যালোচনা ও কেন্দ্রীয় গবেষণা পর্যালোচনা এই তিন ধাপে কর্মশালা চলবে ৫দিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষির সার্বিক উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে বারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমরা সবার কাছে খাবার পৌঁছে দিতে চাই। দেশে পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে। চালের দাম কিছুটা বেড়েছে এটা আমি অস্বীকার করবো না। কম আয় বা সীমিত আয়ের মানুষের একটু কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ অবস্থা নাই’।
তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২০% যা আমরা ২০৩০ সালের মধ্যে ১৩-১৪% এ নিয়ে আসতে চাই। অতি দরিদ্র্যের হার ২০২৩ সালের মধ্যে ১০% এর নিচে নিয়ে আসতে চাই। দেশে মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তন হচ্ছে। তবে এর জন্য মানুষের আয় বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা আমাদের মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ডলার করতে চাই। কৃষি ক্ষেত্র আমাদের অর্থনীতির একটা বড় দিক। তাই কৃষিক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য মানুষকে নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার দেওয়া। এজন্য কৃষিকে আধুনিকায়ন ও যান্ত্রিকীকরণে নিয়ে যেতে চাই।