ডুবে যাওয়া মসজিদে দৈনিক পাঁচবার সাঁতার কেটে গিয়ে মসজিদে আজান দেন এবং একাই নামাজ আদায় করেন মসজিদের ইমাম সাহেব। এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে মসজিদটি প্রায় অর্ধেকই ডুবে আছে পানিতে। তিনি এই জামে মসজিদের ইমাম এবং হাফেজ। তার নাম ইমাম মঈনুর রহমান। ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে এই মসজিদটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
ভিডিওটি ভাইরাল হবার পরে ইমাম মইনুরকে নৌকা ও নগদ টাকা সহায়তা দিয়েছে ‘ডু সামথিং ফাউন্ডেশন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
তিনি কখনও নৌকা পেলে নৌকায় যান, আবার নৌকা না থাকলে, আজানের সময় হয়ে গেলে, সাঁতরিয়ে মসজিদে যান এবং আজান দিয়ে নামাজ আদায় করে এভাবে সাঁতরিয়েই ফিরে আসেন। আর রাতে মসজিদের ছাদেই থাকেন। কেননা, মসজিদ নদী ভাঙনে চলে যাবে। সম্প্রতি ইমাম সাহেবের সাঁতরিয়ে যাওয়া আসার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। মানবিক সংগঠন হিউম্যানিটি ফার্স্টের অ্যাডমিন ও প্রভাষক ইদ্রিস আলী ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে দেন, এরপরে হু হু করে তা ছড়িয়ে পড়ে।
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রায় চারমাস অতিবাহিত হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই ফের ইয়াসের আঘাত। সর্বশেষ ১০ সেপ্টেম্বর খোলপেটুয়া নদীর প্রবল জোয়ারের তোড়ে প্রতাপনগর গ্রামের মানিক হাওলাদারের বাড়ি সংলগ্ন জামে মসজিদের পাশের বিকল্প রিং বাঁধ ভেঙে ফের প্লাবিত হয় প্রতাপনগর, তালতলা, মাদারবাড়িয়া, কুড়িকাহনিয়া ও কল্যাণপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিদিন দুপুরে ও রাতের জোয়ারে নিয়ম করে পানিতে ভাসছে ওই পাঁচ গ্রামের মানুষ।
ইমাম মইনুর বলেন, সম্প্রতি নদী ভাঙন এবং পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মসজিদটি নদীর অনেকটাই ভেতরে চলে গেছে। মুসল্লিরা এখন আর সেখানে যেতে পারেন না। তবে আমি প্রতিদিনই এখানে আজান দিই। রাতে ঘুমাই মসজিদেই।
ইমাম মঈনুর রহমান আরও জানান, এরই মধ্যে তার নিজ বসতভিটাও চলে গেছে পানির নিচে। তাই পরিবার নিয়ে অন্য স্থানে বসবাস শুরু করেছেন। তবে এই মসজিদটিকে কখনও পরিত্যাক্তভাবে পড়ে থাকতে দেন না তিনি। নদীতে জোয়ার এলেই সাঁতরে মসজিদে যেতে হয় ইমাম হাফেজ মইনুর রহমানকে। সম্প্রতি তার এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।