বিজয়নগর পাহাড়পুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবনে সকাল ৯টা থেকে টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও যথাসময়ে শুরু হয়নি। ৯টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় এই কেন্দ্রে টিকাদান কর্মসূচি। কিন্তু এসময় ছিলো না কোনো স্বাস্থ্যবিধির বালাই। মুখে মাস্ক থাকলেও সামাজিক দূরত্বের নিয়মনীতি দেখা যায়নি। স্বেচ্ছাসেবক না থাকায় শুরু করতে পারেননি বলে জানান এই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার।
শনিবার (৭ আগস্ট) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ১টি নারী ও দুইটি পুরুষ বুথে শুরু হওয়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় পাহাড়পুর ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবনে। স্বেচ্ছাসেবক ও নিয়মনীতির কোনো বালাই দেখা যায়নি এই ইউনিয়ন ভবনে।
ইউনিয়নের কামালমুড়া গ্রামের গোলাপি বেগম (৬৫) এসেছিলেন টিকে দিতে কিন্তু এতো বড় লাইন দেখে ফিরে যাচ্ছেন বাড়িতে।
হাত ভাঙা অবস্থায় টিকা নিতে আসা খাটিংঙ্গা গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, ‘লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। শরীরের অবস্থাও তেমন ভাল না। কোনো একজন স্বেচ্ছাসেবকও নাই যে অসুস্থ মানুষকে ধরে একটু সাহায্য করবে।’
সেজামুড়া গ্রামের শতবর্ষী মোহাম্মদ ফিরুজ মিয়া টিকে দিতে এসেছেন কিন্তু এতবড় লাইন দেখে টিকা না দিয়েই বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।
সেজামুড়া গ্রামের আনোয়ারা বেগম লাইনে দাঁড়িয়েছেন সকাল ৭টায় কিন্তু এখনও সামনে ১০০ জন মানুষ হবে কবে লাইন শেষ হবে তিনি জানেন না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘যাদের পরিচিত লোক আছে, রাজনীতি করে, তাদের লোকদের আগে টিকা দিয়ে দেয় কিন্তু আমাদের কোনো লোক নেই তাই টিকা দিতে দেরি হচ্ছে।’
সেজামুড়া গ্রামের জরিনা বেগম সকাল ৮টায় এসেছেন টিকা দিতে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে মাথাঘুড়িয়ে পড়ে যান। পরে বেলা ১১টায় পরিবারের লোকজন এসে বাড়িতে নিয়ে যান জরিনা বেগমকে।
সকাল ১১টা পর্যন্ত দুটি পুরুষ বুথের একটিতে ৬০টি ও অন্যটিতে ৫০টি টিকা দেওয়া হয় এবং মহিলা বুথে ১১টা পর্যন্ত ৩৫টি টিকা দেওয়া হয়। সকাল ৯টায় পরিষদে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খন্দকার ও উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন মনির এবং কয়েকজন আনসার সদস্য ছাড়া স্বেচ্ছাসেবক আর কাউকে দেখা যায়নি এই পরিষদে।
ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার মোহাম্মদ নোয়াব মিয়া বলেন, ‘৩টা বুথে ৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছে কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের সাহায্য করার জন্য রেডক্রিসেন্ট ও স্কাউট সদস্যদের থাকার কথা থাকলেও তাদের পাইনি। পরে নিজেরা লোক ব্যবস্থা করে কাজ চালাচ্ছি।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ খন্দকার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘৬০০ মানুষ টিকা পাবে এখানে। ৬০০ জন থেকে বেশি হলে অন্যরা টিকা ছাড়াই চলে যেতে হবে কারণ এটাই নিয়ম করে দিয়েছে আমাদেরকে। যারা টিকা পাবে না তারা উপজেলা ভবনে গেলেই টিকা পাবে।’ এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ভাল বলতে পারবে বলে তিনি জানান।