ঢাকাসহ সারা দেশে সরকারি কঠোর লকডাউনের ঘোষণার পর ঘরে ফিরতে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে ভিড় করছেন যাত্রীরা।
হাজার হাজার মানুষ ফেরিতে গাদাগাদি করে পাড়ি দিচ্ছে পদ্মা। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কোথাও কোথাও হুড়োহুড়ি করে মানুষ চলাচল করছে।
শনিবার ভোর থেকেই দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা মানুষের ভিড় বেড়েছে পদ্মার এ ঘাটে। লকডাউনে ঢাকার সঙ্গে অন্যান্য এলাকায় দূরপাল্লার গণপরিবহণ বন্ধ রয়েছে। তারপরও নানা কৌশলে মানুষের চলাচল অব্যাহত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ বলেন, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে এখন ১৪টি ফেরি সচল রয়েছে। লকডাউনের নিয়ম অনুযায়ী ফেরিতে শুধু রোগী বহনকারী গাড়ি এবং জরুরি পণ্য পরিবহণের গাড়ি ছাড়া সবকিছু পারাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপক্ষো করেই ঘাটে ভিড় জমাচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া ঘাটের দুই পাড়ে শতশত যান পারাপারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় বিশেষজ্ঞদের সুপারিশে সোমবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যনত সারা দেশে ‘কঠোর লকডাউন’জারির ঘোষণা দিয়েছে সরকার।
এই সময়ে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী পরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত যানবাহন এবং গণমাধ্যম নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট থাকায় ঘাটে আসার আগেই অনেক যানবাহন ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপরও চাপ কমানো যাচ্ছে না।
লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলার বন্ধ থাকায় ফেরিতে করেই যাত্রী পারাপার হচ্ছে। তবে গণপরিবহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে যেতে নানা বিড়ম্বনায় পড়ছে হচ্ছে লোকজনকে।
৩ নম্বর পন্টুন সংযোগ সড়ক বর্ষার পানিতে জলমগ্ন হওয়ায় দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।
এদিকে জেলায় ২০টি চেকপোস্ট বসিয়ে লকডাউন কার্যকরে কাজ করা হচ্ছে বলে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন জানান।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তা-বাজারে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দূরপাল্লার গণপরিবহণ বন্ধ করার পরেও ঠেকানো যাচ্ছে না চলাচল। মানুষ নানা কায়দায় ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছেন। আবার অনেকে ঢাকায় প্রবেশ করেছেন।
রাজধানীর কমলাপুর এলাকা থেকে বিভিন্ন যানে রাজধানী ছাড়তে দেখা গেছে অনেককে। প্রাইভেটকার, মিনি ট্রাক ভাড়া করে বিভিন্ন জেলায় ছুটছেন।
অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রী। ট্রেন বন্ধ থাকায় বিকল্প পন্থায় গ্রামে ফিরছেন তারা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে রিতা নামের এক নারী তার মা ও শিশু সন্তান নিয়ে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় এসেছেন।
৩ দিন বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে চিকিৎসা করিয়ে ফিরে গেছেন শুক্রবার। দূরপাল্লার কোনো যান না থাকায় একটি প্রাইভেটকার ভাড়া করে বাড়ি ফিরছেন।