শ্বাসকষ্ট নিয়ে রোগীদের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে শ্বাসকষ্টের রোগীর টেস্ট করানোর পর রেফার্ড করছে সরকারি হাসপাতালে। সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কথা বলে অন্য সরকারি হাসপাতালে রেফার্ড করা হচ্ছে।
এদিকে প্রিয় স্বজনকে বাঁচাতে চলছে স্বজনদের প্রাণান্তকর চেষ্টা। তবুও এতটুকু চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না তারা। মিলছে না অক্সিজেন, আইসিইউ অথবা সাধারণ একটা শয্যা। রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নগরীর খালিশপুর নয়াবাটি এলাকার বাসিন্দা জুলেখা বেগমের (৬৫) সোমবার (২১ জুন) রাত ৩ টায় হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এ সময় তাকে অ্যাম্বুলেন্স যোগে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে। রোগীর শ্বাসকষ্ট থাকায় ভর্তি নেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া সিটি মেডিক্যালে। সেখান থেকেও তাকে ফেরত দেওয়া হয়। এরপর নেওয়া হয় গাজী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানেও ভর্তি করতে ব্যর্থ হন তারা। এরপর ফরটিস এসকট হাসপাতালে ভর্তি হয় ভোর ৬টায়। সেখানে ৩ ঘণ্টায় বিভিন্ন টেস্টে গুনতে হয় ১২ হাজার টাকার বিল। কিন্তু সেখান থেকেও তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে রেফার্ড করা হয়।
জুলেখা বেগমের ছেলে মো. লিটন বলেন, খুমেক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরও মাকে অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে অক্সিজেন দিয়ে শুইয়ে রাখি। দুই ঘণ্টারও বেশি মাকে অ্যাম্বুলেন্সে রাখা হয়। এরপর হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ জানান, অক্সিজেন নেই তাকে দ্রুত খুলনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা আমার মাকে সদর হাসপাতালে রেফার্ড করেন। দুপুর ১২টার দিকে সদর হাসপাতালে মাকে নিয়ে আসি। সেখানে মাকে ভর্তি করানো হয়।
নগরীর পূর্ববানিয়াখামার চৌধুরী গলির বাসিন্দা মাহমুদুল হক রুবেল (৪০) এক সপ্তাহ ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বাসায় বসেই অক্সিজেনের মাধ্যমে শ্বাস নিচ্ছিলেন। সোমবার (২১ জুন) তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা সদর হাসপাতালে।
রোগীর স্বজন মহিদুল হক শান্ত জানান, সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে করোনার টেস্ট না থাকায় তাকে ফেরত দেওয়া হয়। তারপর নিরুপায় হয়ে তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ব্যাপারে রাত সাড়ে ৮টায় সদর হাসপাতালে ডেডিকেটেড করোনা ইউনিটের ফোকাল পার্সন (ইএনটি জুনিয়র কনসালটেন্ট ) ডা. কাজী আবু রাশেদকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র আরএমও ডা. অঞ্জন কুমার চক্রবর্তী বলেন, রোগীর অভিযোগ সত্য না। আমাদের এখানে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতি নেই।
এ বিষয়ে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, জেনারেল হাসপাতালে শুধুমাত্র পজেটিভ রোগীই ভর্তি করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কেউ শ্বাসকষ্ট নিয়ে এসে যদি করোনা হয়েছে- বলে জোর দাবি করে ভর্তি হতে চায়, তাদের আমরা ভর্তি করছি। তবে, এখানে সাধারণ রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না।