সেতু থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন এক বৃদ্ধা। মূলত আত্মহত্যা করতে এমন কাজটি করেছেন তিনি। কিন্তু ঘটনাস্থলের কাছে পুলিশ উপস্থিত থাকায় নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যান এই নারী। পরে হাসপাতালে ভর্তির চার ঘণ্টা পর জ্ঞান ফেরে তার। আপাতত শঙ্কামুক্ত হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ছেলেদের স্ত্রীর দ্বারা নির্যাতিতা বৃদ্ধা নয়ন বেগম।
আজ সোমবার দুপুরে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সড়কের গাছতলা সেতুতে ঘটে এমন মর্মস্পর্শী ঘটনা।
ঘটনার চার ঘণ্টা পর সন্ধ্যার কিছুটা আগে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে জ্ঞান ফেরে এই নারীর। তারপর বিড়বিড় করে নিজের কষ্টের কথা জানান তিনি। বলেন, জেলার শাহরাস্তি উপজেলার রাগৈ গ্রামের মৃত মোহাম্মদ হোসেনের স্ত্রী তিনি। স্বামী মারা গেছেন সেই অনেক আগে। তিন মেয়েকে বিয়ে দেন। এখন দুই ছেলে জহির ও জুয়েলের সংসারে থাকেন। কিন্তু সন্তানদের স্ত্রীরা নানা কারণে নির্যাতন চালাতো তার ওপর। এক কিংবা দুই দিন নয়। টানা এমন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের পর সিদ্ধান্ত নেন আত্মহত্যা করবেন তিনি। তাই সোমবার সকালে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সড়কের গাছতলা সেতুতে পৌঁছান তিনি। ক্ষোভ আর কষ্টে সেই আত্মহত্যার পথে পা বাড়ান তিনি। অবশেষে নদীতে ঝাঁপিয়েও পড়েন। কিন্তু অলৌকিকভাবে বেঁচে যান।
দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকারী চাঁদপুর সদর মডেল থানার উপ পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, হঠাৎ করে সেতু থেকে কিছু একটা পড়ে যেতে দেখলাম। নিচে তাকিয়ে দেখি একজন নারী পানিতে হাবুডুব খাচ্ছে। দৌড়ে সহকর্মীদের নিয়ে সেতু থেকে নেমে পড়ি। নদীর পানি থেকে তীরে তুলে নিয়ে আসি এই নারীকে। পরে হাসপাতালে। এখানে নীবিড়ভাবে চলছে তার চিকিৎসা সেবা।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. সৈয়দ আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে সুস্থ হলেও আরো কিছুদিন হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে রোগীকে রাখার পক্ষে মতামত প্রদান করেন।
জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ জানান, বৃদ্ধা নয়ন বেগম কেনো আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন এবং এর প্রকৃত কারণ কী। তা খুঁজে বের করতে তার ঠিকানা মোতাবেক শাহরাস্তি থানা পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনাস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এভাবে একজন নারীর আত্মহত্যার চেষ্টা দুঃখজনক।