ইয়াসের প্রভাবে পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় বুধবার কক্সবাজার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা। এর মধ্যে সেন্টমার্টিনের অবস্থা ভয়াবহ।
বিধ্বস্ত ও পানির নিচে তলিয়ে গেছে কয়েক হাজার ঘরবাড়ি। ব্রিজ, কার্লভাট ও রাস্তাঘাট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের শতাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি। কক্সবাজার জেলার উপজেলার উপকূলীয় এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। পাশাপাশি জোয়ারের পানি এলাকায় ঢুকে কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
তিনটি এলাকায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও মানুষ। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কেও আছড়ে পড়ছে জোয়ারের পানি।
দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল জোয়ারের পানিতে উপড়ে যাচ্ছে গাছপালা। ভাঙন ধরেছে জেটির পন্টুনে ও রাস্তাঘাটে। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে বেড়িবাঁধের ব্লকে ধস নেমেছে। তবে মানুষের জানমাল রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে জোয়ারের পানিতে মাতারবাড়ির ইউনিয়নের ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। ইতোমধ্যে ৪০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। উপড়ে গেছে গাছপালা। স্থানীয় প্রশাসনের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কুতুবদিয়ার উত্তর ধুরুং, আলী আকবরডেইল ও কৈয়ারবিল ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ২০টির বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে হাজারও মানুষ। শাহপরীর দ্বীপে জোয়ারের পানি ও ঝড়োবাতাসে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেড়িবাঁধ।
সেন্টমার্টিনের অবস্থা ভয়াবহ। তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে রাক্ষুসে সাগর। ভেঙে যাচ্ছে জেটির পন্টুন। সেন্টমার্টিন দ্বীপের শতাধিক গ্রামে ঢুকে পড়েছে জোয়ারের পানি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, কক্সবাজার উপকূলের ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছিল দুই দিন আগেই। প্রস্তুত রাখা হয়েছিল আশ্রয় কেন্দ্র এবং স্বেচ্ছাসেবকদের। মানুষের জানমাল রক্ষায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ঝুঁকি থেকে কক্সবাজার মুক্ত বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আবদুর রহমান।
তিনি বলেন, কক্সবাজারে ৩নং সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে। সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট পর্যন্ত বাড়তে পারে।