চান্দিনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ও মারামারির জের ধরে আজ শুক্রবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে বেদে সম্প্রদায়। বিকেল পৌনে ৬টার পর উপজেলার হাড়িখোলা বেদেপল্লী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এতে চট্টগ্রামমুখী লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৩০ মিনিট পর পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাড়িখোলার সড়ক ও জনপথের খাস জায়গায় প্রায় ৩০ বছর আগে অবস্থান নেয় বেদে সম্প্রদায়। পরে তারা হাড়িখোলা ও পাশের থানগাঁও এলাকায় জমি কিনে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছে। বেদেরা তাদের ব্যবহৃত পানি স্থানীয়দের ফসলি জমিতে নিষ্কাশন করায় বাধা দেয় স্থানীয় লোকজন।
এতে গত বুধবার বিকেলে বেদেপল্লীতে হাড়িখোলার কয়েকজন যুবকের সঙ্গে বেদেদের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। গতকাল ওই দ্বন্দ্ব ও মারামারির ঘটনা তদন্তে যান জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) জুয়েল রানা, চান্দিনা থানার ওসি শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছসহ পুলিশের একটি টিম। এরই মধ্যে মহাসড়ক অবরোধ করে পাঁচ শতাধিক বেদে নারী-পুরুষ।
হাড়িখোলা বেদেপল্লীর সর্দার রুহুল আমিন বলেন, ‘আমাদের বেদেরা অনেক কষ্টে উপার্জন করে ফসলি মাঠের মাঝে জমি কিনে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছে। জমির আইল দিয়ে যাতায়াত করে আসছে তারা। আজ কয়েক দিন ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদের উসকানিতে স্থানীয় লোকজন যাতায়াতের সব পথ বন্ধ করে দেয়। আজ চার দিন ধরে আমরা স্থানীয়দের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়েও কোনো সমাধান পাচ্ছি না।’
চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘দ্বন্দ্ব নিরসনে আমি সালিস-দরবারের জন্য বেদেদের ডেকেছিলাম। কিন্তু তারা সালিসের বিষয়ে জানাবে বলেও জানায়নি। পুলিশ তদন্তে গেলে বেদেরা সড়ক অবরোধ করে।’
চান্দিনা থানার ওসি শামসউদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। মারামারির ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মারামারিতে আহতরা হলেন- হাড়িখোলা এলাকার মতিন মিয়ার ছেলে মঈন উদ্দিন (২২), সহিদুল ইসলামের ছেলে আরিফ (১৮), মজিদ মিয়ার ছেলে আনিছ (২৭), মোসলেম মিয়ার মেয়ে ফাতেমা (২৫) এবং বেদে সম্প্রদায়ের ছয়জন।