অত্যাচারে ঘর ছেড়ে বাপের বাড়ীতে যেয়ে শিশু সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার তাগিদে বড় কষ্ট করে ২০ কাঠা ধান করেছিলাম। ধান পেকে গেলে ওই ধান এই রোদ গরমে শিশু সন্তানদের সাথে করে কেটে মাঠে শুকিয়ে গাদা দিয়ে রেখে ছিলাম বুধবার দুপুরে। ওই রাতেই মাঠে থাকা ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে আমার সন্তাদের মুখের খাবার কেড়ে নিয়েছে আমার মাদকসেবী পাষণ্ড স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। এখন আমি আমার শিশু সন্তানদের কিভাবে বাঁচাবো।’ পানি টলমল চোখে এ ভাবেই কালের কণ্ঠের কাছে বলছিলেন ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পল্লীর দোড়া গ্রামের এক ভুক্তভোগী নারী কৃষক সুফিয়া বেগম।
সুফিয়া বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ১৫/১৬ বছর আগে উপজেলার পার্শ্ববর্তী কুশনা ইউনিয়নের মামুনশিয়া গ্রামে। স্বামী জাহাঙ্গীর আলম একজন মাদকসেবী। আমাদের ঘরে (এক মেয়ে দুই ছেলে) তিনটি শিশু সন্তান রয়েছে। স্বামী জাহাঙ্গীর ঠিক মত আমাদেরকে খেতে পরতে দিত না। যে কারণে আমাকে পরের বাড়িতে কাজ করতে হতো। তার মধ্যেও আমাকে প্রায়ই মারধোর করতো। এর মধ্যে আট বছর স্বামী জাহাঙ্গীর বাড়ী ছেড়ে চলে যায। তার কোন খোঁজ খবর ছিলো না। তারপরও স্বামীর ভিটে আঁকড়ে ধরে ছিলাম। হঠাৎ তিন মাস আগে সে বাড়ীতে ফিরে আসে। তারপর থেকে আমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে আমি বাপের বাড়িতে চলে আসি।
কয়েক দিন আগে সে আমাকে নিতে আসে। আমি আর সেখানে ফিরে যাব না জানিয়ে দিই। তখন সে আমাকে দেখে নেয়াসহ লাগানো ধান কি করে ঘরে তুলি তা দেখবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়। বুধবার দিনগত রাতে সে ওই ধানের গাদায় আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় জাহাঙ্গীর।
সুফিয়া বেগম দাবী করেন, রাতে আঁধারে আগুন ধরাতে আমি না দেখলেও আমি নিশ্চিত আমার স্বামীই এই অপকর্মটি করেছে। এ ব্যপারে তিনি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান।
ওই এলাকার মেম্বার আশরাফ আলী বলেন- মেয়েটি খুব কষ্ট করে ধান করেছিলো। এই খাঁ খাঁ রোদে শিশু সন্তানদের সাথে নিয়ে কাটা ধান শুকিয়ে পাশাপাশি দুই জায়গায় গাদা দিয়ে রেখেছিল সে। এই কষ্টের ফসল পুড়িয়ে দেয়ার কঠোর শাস্তি হয়া উচিত।
বিষয় নিয়ে কোটচাঁদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈন উদ্দীন কালের কণ্ঠকে বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।