করোনার টিকা পেতে নতুন কূটনীতিতে নেমেছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরু থেকে কেবল ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভর না করে বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালালে টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হতো না। আর অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের অন্য কোনো কোম্পানির টিকা না নেয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
গত ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে তিন কোটি ডোজ টিকা কিনতে চুক্তি হয়েছিলো বাংলাদেশের। শর্ত অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৫০ লাখ করে তিন কোটি ডোজ টিকা দেয়ার কথা দেশটির। কিন্তু এখন পর্যন্ত সিরাম ইনস্টিটিউট সরবরাহ করেছে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ।
দেশে অন্য কোনো কোম্পানির টিকা না থাকায় সোমবার থেকে প্রথম ডোজ দেয়া বন্ধ রয়েছে। প্রথম ডোজ দেয়া সবাই অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় ডোজ পাবেন কি-না তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। কারণ আপাতত টিকা রপ্তানি করবে না ভারত।
সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা সংগ্রহে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় রাশিয়ার করোনা ভ্যাকসিন ‘স্পুটনিক ভি’র ৪০ লাখ ডোজ আগামি মাসে আসতে পারে বলে গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকেও টিকা আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে, দুই সপ্তাহ আগে দেশে কোনও টিকা আসবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বেশিরভাগ মানুষকে টিকার আওতায় আনতে না পারলে মৃত্যু ও সংক্রমণ বাড়তে পারে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান জানান, ভ্যাকসিনের তিনটি উদ্দেশ্য হচ্ছে মৃত্যু কমানো, হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা কমানো এবং সবশেষ সংক্রমণের হার কমানো। যথা সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে ভ্যাকসিনের এ সংকট হতো না বলেও জানান অধ্যাপক সায়েদুর রহমান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও জানালেন সংকট আছে, চেষ্টাও চলছে।
এদিকে, গবেষণা ছাড়া অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ডোজ নেয়া ব্যক্তিকে দ্বিতীয় ডোজে অন্য কোম্পানির টিকা না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় টিকা কারিগরি পরামর্শক দলের সদস্য অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ।
প্রথম ডোজ দেয়ার পর যথাসময়ে দ্বিতীয় ডোজ না দিতে পারলে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে শুরু করবে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।