সরকারিভাবে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় রাজধানী বাদে ঢাকা বিভাগে আইসিইউ আছে মাত্র ছয় জেলায়। আরও কয়েকটি জেলা বরাদ্দ পেলেও দক্ষ জনবল, অবকাঠামো ও সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট না থাকায় আইসিইউ চালু করা সম্ভব হয়নি। চার জেলায় নেই করোনা পরীক্ষার আরটিপিসিআর মেশিন। আর ৬ জেলায় নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন।
করোনা চিকিৎসায় দেশের মানুষের মূল ভরসা রাজধানীর হাসপাতালগুলো। গেলো ১ বছরে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল মিলে যে পরিমাণ আইসিইউ বা অন্য সুবিধা বাড়ানো হয়েছে, শুধু রাজধানীতেই হয়েছে তারচেয়ে বেশি।
রাজধানী বাদে ঢাকা বিভাগের সবচেয়ে বেশি ১৬টি আইসিইউ আছে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এখানে আরও আছে ১৬টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও ১০টি ভেন্টিলেটর। তবে কারিগরি ত্রুটির কারণে এসবের বেশ কয়েকটি অকেজো।
গাজীপুরেও আছে ১০টি আইসিইউ, ২২টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও ১০টি ভেন্টিলেটর।
নারায়ণগঞ্জে করোনা শনাক্তের হার প্রথম থেকেই উপরের দিকে। এ জেলায় ১০টি আইসিইউ থাকলেও নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা।
কিশোরগঞ্জে আছে ১০টি আইসিইউ, ৪টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা। তবে ৯টি ভেন্টিলেটর থাকলেও দক্ষ জনবলের অভাবে তা কাজে আসছেনা।
গোপালগঞ্জের সরকারি হাসপাতালে আছে ১০টি আইসিইউ, ৬টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও ১০টি ভেন্টিলেটর।
টাঙ্গাইলে ৭টি ভেন্টিলেটর থাকলেও তা কাজে আসছেনা। ১০টি আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ পেলেও কবে স্থাপন করা হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
তবে দ্রুতই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস সিভিল সার্জন ডা. এ এফ এম সাহাবুদ্দিন খানের। তিনি বলেন, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা দিতে হলে হাসপাতালে অবশ্যই সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন থাকতে হবে। এই হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন রয়েছে আর কোভিড ইউনিটে কাজ চলমান আছে।
শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের কোভিড রোগীদের জন্য সাধারণ শয্যা ছাড়া আর কোন সুবিধা এখনও স্থাপন করতে পারেনি স্বাস্থ্যবিভাগ। এসব হাসপাতালে সক্ষমতা কবে অর্জন হবে, তা অনিশ্চিত।
রাজবাড়ি ও মুন্সীগঞ্জেও নেই সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট। ফলে আইসিইউ শয্যা বরাদ্দ থাকলেও কবে চালু হবে তার উত্তর নেই।
মানিকগঞ্জ ও নরসিংদীর সরকারি হাসপাতালে আছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা। মানিকগঞ্জে দুটি আইসিইউ থাকলেও জনবল না থাকায় রোগী ভর্তি করা হয়না। আর নরসিংদীতে অবকাঠামোই তৈরি হয়নি।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চূড়ায় উঠতে থাকলেও দায়িত্বশীলরা এখনও শুধু আশ্বাসই দিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।