মুরাদনগরে অপহরণের পর মুক্তিপণের ৫০ লাখ টাকা না পেয়ে আবদুর রহমান নামের পাঁচ বছরের এক শিশুকে হত্যা করেছে তার আপন ফুফা। হত্যার শিকার আবদুর রহমান (৫) উপজেলার গাংগাটিয়া গ্রামের মো. ফারুক মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ওই শিশুটির ফুফাসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আমামিদের দেওয়া তথ্যমতে, সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলার বোড়ারচর এলাকা থেকে মাটি খুঁড়ে শিশুটির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন উপজেলার বোড়াচর গ্রামের আ. বাতেন বেপারীর ছেলে মো. ময়নাল (৩৪), আবু মুসার ছেলে ও নিহত শিশু আবদুর রহমানের ফুফা নাজমুল হাসান (৩০) এবং একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. রবিউল হাসান (২৭)।
ঘটনার ৩৮ দিন পর একটি ফোনকলের সূত্র ধরে ছদ্মবেশে পুলিশ মুক্তিপণের টাকা দিতে গিয়ে অপহরণচক্রের সদস্যদের হাতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় এসআই সাইফুল বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও পরিবারের লোকজন জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজ ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় অপহরণ হয় শিশু আবদুর রহমান। এ সময় শিশু আবদুর রহমানের বাবার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় পরদিন বাবা ফারুক মিয়া মুরাদনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অপহরণের কিছুদিন পর শিশুটির পিতা ফারুকের মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর নম্বরে ফোন করে ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
এ ঘটনায় সোমবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হামিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ছদ্মবেশে মুক্তিপণের টাকা দিতে বাখরাবাদ এলাকায় অপহরণচক্রের দেওয়া ঠিকানায় যান। পরে সেখান থেকে মুক্তিপণের সর্বশেষ দাবিকৃত চার লাখ টাকা নিতে আসে অপহরণকারী চক্রের সদস্য ময়নাল।
টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় এসআই হামিদুল ইসলাম ময়নালকে ধরে ফেললে অপহরণকারী চক্রের অন্য সদস্যরা পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে ময়নালকে আটক করে পুলিশ। পরে ময়নালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সোমবার দিবাগত রাতেই অপহরণের ও হত্যার সঙ্গে জড়িত নাজমুল হাসান ও রবিউল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান বলেন, অপহরণচক্রের আটককৃত সদস্যদের আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এসআই সাইফুল বাদী নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সাত ধারায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীর আবিদুর রহমান বলেন, শিশু আবদুর রহমান অপহরণের ঘটনায় আমরা ময়নাল, নাজমুল হাসান ও রবিউল হাসান নামের তিন অপহরণকারীকে আটক করেছি।