জাতীয় নির্বাচন দ্রুত চান তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন চাই এজন্য যে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া জনগণকে আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। সেজন্য আমরা মনে করি এক হচ্ছে সংস্কার করতে হবে, তা নিয়ে যাবে পার্লামেন্টে, সেভাবেই অনুমোদন করা হবে। ডিবেট করে সেখানে তা পাশ করাতে হবে এবং তাদের জনপ্রতিনিধিকে গ্রহণ করিয়ে সেটা করতে হবে। সুতরাং নির্বাচন যত তাড়াতাড়ি হবে তত দেশের জন্য মঙ্গল।
তিনি বলেন, দ্বিতীয়ত- ফাঁদ থাকলে সেখানে শত্রুরা বিপ্লবকে ব্যর্থতায় পরিণত করতে সুযোগ পেয়ে যায় এবং পাচ্ছে। দেখবেন নানা মহল বিভিন্ন জায়গায় দাবি-দাওয়া নিয়ে আসছে। কেন তা আগে কেউ করেনি, এখন নিয়ে আসছে কেন? অপেক্ষা করেন? জনগণের সরকার আসুক। এসব বিষয় বুঝা উচিত, মাথা রাখতে হবে। অনেকে বলেন যে, এতদিন পারিনি তাই এখন দাবিগুলো নিয়ে আসছি। এটাতে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।
কিছু উপদেষ্টার কথায় খটকা লাগে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, একটা সরকারে দায়িত্ব পালন করছেন উপদেষ্টারা। তারা এমন কোনো কথা বলবেন না বা এমন কোনো কাজ করবেন না- যাতে জনগণ বিভ্রান্ত হন। আমাদের সম্ভবত স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা (হাসান আরিফ) বলেছেন, চার বছর সরকারের মেয়াদ। এটা তার বলার কথা নয়। তারা কমিশন গঠন করেছেন সেই কমিশন প্রস্তাব দেবেন। জনগণ গ্রহণ করবে, তারপর না জনগণ ঠিক হবে; কিন্তু যিনি ক্ষমতায় বসে আছেন তিনি যদি বলেন যে, সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে তাহলে একটা চাপ পড়ে যায়। এই কাজটা হাসিনা (শেখ হাসিনা) খুব ভালোভাবে করতেন। যেকোনো মামলার রায়ের আগে বলে ফেলতেন ওইটা ওটা। এসব কখনো সঠিক পথে নিয়ে যাবে না। তাই অনুরোধ করব, এমন কথা-বার্তা না বলা উচিত যেটাতে জনগণ বিভ্রান্ত হন।
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাসী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িকতায় বিশ্বাস করে। আমরা সব সময় সকল সম্প্রদায় একসঙ্গে কাজ করে আসছি, একসঙ্গে যুদ্ধ করেছি। ইদানীং দেখছি একটা সম্প্রদায়ের মানুষ বড় রকমের আন্দোলন সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সেটা কেন জানি না, বাংলাদেশের বিপদ সম্পর্কে ভারতের যে বক্তব্য তার সঙ্গে মিলে যায়। যেটা বাংলাদেশের এই বিপ্লব, ছাত্র-জনতার রক্ত দিয়ে যে অর্জন করা সেটাকে অনেকাংশে বিপন্ন করার চেষ্টা করছে। এই কথা বলতে আমি বাধ্য হলাম। আমাকে বিদেশের সাংবাদিকরা টেলিফোন করেন, বিশেষ করে ভারতের সাংবাদিকরা, তারা বলতে চান- স্যার ড. ইউনূস কী রাষ্ট্র চালাতে পারছেন না। এ ধরনের কথাবার্তা তাদের কাছ থেকে আসে। আমি তাদের বলি প্রশ্নই উঠতে পারে না। গোটা দেশের মানুষ তার (ড. ইউনূস) ওপর আস্থাশীল। তিনি সুন্দরভাবে দেশ চালাচ্ছেন। যাকে মানুষ সমর্থন দিয়েছে সেখানে কোনো কিছু থাকতে পারে না।