ঈদুল আজহা উপলক্ষে হাটগুলোতে জমে উঠেছে পশুর বেচাকেনা। প্রতিবারের মতো এবারও চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর। পিছিয়ে নেই ছাগল ও ভেড়া।
তবে এবার দাম নিয়ে ক্রেতাদের অভিযোগ রয়েছে। গরু বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ১ লাখ টাকায়। আর মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকায়। ছাগলও সর্বনিম্ন ১০ হাজারের নিচে বিক্রি হচ্ছে না। মাঝারি আকারের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১৫ হাজার টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, হাটে মাঝারি আকারের গরু সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। অনেক ক্রেতা দাম শুনে চলে যাচ্ছেন। তারা দাম বলতে চাচ্ছেন না।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তারাশাইল হাটে গিয়ে দেখা গেছে, মাঝারি আকৃতির গরু ১ লাখ থেকে দেড় লাখে বিক্রি হচ্ছে। এসব গরুর চাহিদাও বেশ। এ ছাড়াও অনেক ছোট গরুও হাটে এসেছে। সেগুলোও বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ হাজারের মধ্যে।
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মনোহরপুর খেলার মাঠের পশুর হাটে বিক্রেতা রজব আলী বলেন, ৪টি গরু নিয়ে হাটে আসছি। একটির দাম চেয়েছি দেড় লাখ ও বাকি তিনটা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা করে। এরমধ্যে একটি গরু ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। দামে না হওয়ায় বড় দু’টি গরু বিক্রি করিনি।
একই হাটের সোহেল সর্দার নামে আরেক বিক্রেতা বলেন, গরুর বাজার ভালো না। বাজারে গরুর মাংসের দাম বেশি। কিন্তু হাটে গরুর দাম কম। বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি। সেই হিসেবে এক মণ মাংসের দাম পড়ছে ৩০ হাজার টাকা। অনেকেই এই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম দাম বলছেন। গরুর দাম চাইলে ক্রেতারা দাম না বলে চলে যাচ্ছেন।
একই উপজেলার বাসিন্দা মামুন সর্দার দু’টি গরু বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, হাটে গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কম। এবারের হাটে গরু বেশি থাকলেও ক্রেতা কম। অনেকেই শেষ হাটের দিকে গরু কিনবেন।
গরু ক্রেতা মোতালেব মিয়াজী বলেন, হাটে গরুর দাম তুলনামূলক বেশি। এক লাখ ও দেড় লাখ টাকা দামের গরুগুলো বেশি বিক্রি হচ্ছে। ছোট ও মাঝারি আকারের এই গরুগুলোর চাহিদা বেশি। যে গরু পছন্দ হচ্ছে তা দেড় লাখের নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই হাটে গরু দেখছি। পছন্দ আর দামে হলে গরু নেবো।
আরেক ক্রেতা শামীম আহমেদ বলেন, সাত ভাগে কুরবানি দেবো। তাই একটা গরু কিনেছি এক লাখ ৪৫ হাজার টাকায়। গরুটির ওজন হবে প্রায় সাড়ে ৪ মণ। এই সাইজের গরু গেল বছরে এক লাখ ১০ হাজারে পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবার দাম অনেক বেশি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এবার স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে অন্তত ৪৯০টি কোরবানির পশুর হাট ইজারা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৮টি, অস্থায়ী ৩৯৪টি। সবচেয়ে বেশি পশুর হাট বসেছে মুরাদনগর ও বরুড়া উপজেলায় ৪১টি করে। এ ছাড়া চৌদ্দগ্রামে বসবে ৩৬টি। অনলাইনেও চলছে পশু বেচা-কেনা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ২ লাখ ৭৯ হাজার ১২০টি পশু কোরবানির চাহিদা রয়েছে। তার বিপরীতে এবার পশু রয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৮৮টি।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান বলেন, আমরা প্রতিটি হাট তদারকি করছি যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়।