ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে খুনের উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি শিলাস্তি রহমান।
সোমবার (৩ জুন) আদালত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
আদালত সূত্রের তথ্যমতে জবানবন্দিতে শিলাস্তি বলেছেন, ‘ভারতে বাসা ভাড়া করার আগে শিলাস্তিকে নিয়ে মার্কেটে গিয়ে ট্রলি ব্যাগ কিনেছিলেন আসামি আখতারুজ্জামান শাহিন।
এদিকে হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমপি আনারকে কলকাতায় রিসিভের দায়িত্বে ছিলেন শিলাস্তি রহমান। নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন তিনি।
রিমান্ডে শিলাস্তি এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকর্মীদের বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
সোমবার রিমান্ড চলাকালীন তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
তবে শিলাস্তি এরআগে, দুইবার আদালতে এসে নিজেকে নির্দোশ দাবি করেন। এমনকি নিজের পক্ষে কোনো আইনজীবী নিয়োগেরও ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি।
সংসদ সদস্য আনার চিকিৎসা করাতে ১২ মে ভারতে যান। কলকাতার অদূরে বরাহনগরে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে এক রাত থাকার পর ১৩ মে দুপুর থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন তিনি। ১৮ মে সংশ্লিষ্ট থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন তার বন্ধু গোপাল। ২২ মে নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের ৫৬-বিইউ ফ্ল্যাটে খুন হওয়ার কথা জানায় সিআিইডি। এ ঘটনায় বাংলাদেশে চারজন ও কলকাতায় দুজন গ্রেফতার হয়েছেন।এদিকে, সংসদ সদস্য আনার খুনের রহস্য উদঘাটনে ২৬ মে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল কলকাতায় যায়। পাঁচদিন পর ৩০ মে তারা দেশে ফেরেন। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ওয়ারি বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ আব্দুল আহাদ ও এডিসি শাহীদুর রহমান। ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক ভাঙে দেশটির সিআইডি। সেখানে চার কেজির বেশি খণ্ডিত মাংসপিণ্ড পাওয়া যায়, যা পরে ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়। ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে জানা যাবে ওই দেহাংশ সংসদ সদস্য সংসদ সদস্য আনারের কি না।
পরে দেশে ফিরে ডিবির হারুন জানান, কলকাতায় আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে তদন্তকাজ শতভাগ সফল হয়েছে। আলামত উদ্ধার, পারিপার্শ্বিক ডিজিটাল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করায় তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। দুদেশের গোয়েন্দাদের তথ্য সমন্বয়ে মামলার তদন্ত পরিচালনা করায় ফলপ্রসূ ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।