উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
নড়াইল সদর হাসপাতালে রোগীর চাপে কাঙ্খিত সেবা মিলছে না। চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ১৬ জন। এমন বাস্তবতায় ‘নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল’। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, ১০০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৪শ’র বেশি রোগী। প্রতিনিয়ত বর্হিবিভাগ ও জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসছেন গড়ে ১ হাজার ৫০০ এর কাছাকাছি রোগী। কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্য সেবা মিলছেনা হাসপাতালটিতে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১০০ শয্যার নড়াইল আধুনিক সদর হাসপাতাল জেলার ৮ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবার একমাত্র ভরসাস্থল। সারা বছরই এখানে থাকে রোগীদের ভিড়। এই মৌসুমে বৃষ্টির সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ বিভিন্ন রোগে ব্যাপক ভাবে আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে হাসপাতালে রোগীদের ভীড় অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তার উপর ডেঙ্গু মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।
হাসপাতালটিতে রোগীদের চিকিৎসার জন্য ৪০ জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ থাকলেও। অধিকাংশ সিনিয়র ডাক্তারের পদ শূন্য। এসব শূন্য পদ পূরণ না হওয়ায় রোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে। হাসপাতালে নতুন করে একটি ভবন তৈরি করা হয়েছে। গত বছরেরে জুনে তা হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখনও তা হস্তান্তর করা হয়নি। কবে হস্তান্তর করা হবে সেটাও অনিশ্চিত।
হাসপাতালে ডাক্তারদেরও আবাসন সমস্যাও প্রকট। যার কারণে সেখানে ডাক্তাররা থাকতে চান না। দূর থেকে গিয়ে হাসপাতালে ডাক্তাররা ডিউটি করেন। আবার চলে যান। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় নড়াইলে যাতায়াত ব্যবস্থা সহজ হয়ে গেছে।
যার কারণে আর্থিকভাবে সচ্ছল জটিল রোগীরা ওই সরকারি হাসপাতালে না গিয়ে এখন রাজধানীতে গিয়ে চিকিৎসা নেন। আর গ্রামগঞ্জের অসহায় দরিদ্র রোগীদের একমাত্র আস্থার জায়গা সদর হাসপাতালটির করুন অবস্থায় দরিদ্র রোগীরা উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগ,বহির্বিভাগ, অন্তঃবিভাগসহ সর্বত্র চিকিৎসা প্রার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। চিকিৎসা নিতে আসা মানুষজন তীব্র গরমে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
এদিকে শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায় সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র! এখানে মাত্র ১৯ টি বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ১৩০ এর বেশি। একটি বেডে ৪ থেকে ৫জন শিশুকে রেখেও স্থান সংকুলান হচ্ছেনা। এ বাস্তবতায় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া নিয়ে চিকিৎসা প্রার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অসন্তোষ।
হাসপাতলে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী বলেন, হাসপাতালে একদিকে বেড সংকট অন্যদিকে ডাক্তারও কম এজন্য চিকিৎসা ঠিকমত পাওয়া যাচ্ছে না। নড়াইলের নিম্নবিত্ত মানুষ এ হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এখানে এসে চিকিৎসা সেবা পেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এই সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয় এমনটাই দাবী তাদের।
হাসপাতালটিতে ১০০ শয্যার বিপরীতে ৪০ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ১৬জন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ২৪ টি পদের ১৮টি শূন্য রয়েছে জানিয়ে হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল গফ্ফার বলেন, হাসপাতালে বিরাজমান নানা সংকট সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও চিকিৎসা প্রার্থীদের কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।