(৪ জুন) রাতে সীতাকুণ্ডের বেসরকারি বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন নেভাতে গিয়েছিলেন সীতাকুণ্ড স্টেশনের ফায়ার ফাইটার রবিউল ইসলাম। স্টেশন থেকে বের হওয়ার আগে মাকে ফোন দিয়ে দোয়া চেয়েছিলেন তিনি। এটাই ছিল মায়ের সঙ্গে রবিউলের শেষ কথা। ডিপোতে আগুন নেভাতে যাওয়ার পর এখন পর্যন্ত তার খোঁজ মেলেনি। চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ডিএনএ নমুনা দিয়ে এখন ছেলের মরদেহ শনাক্তের অপেক্ষায় রয়েছেন বাবা খাদেমুল ইসলাম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওগাঁ শহরের চকপাথুরিয়া ফকিরপাড়া মহল্লায় ফায়ার ফাইটার রবিউল ইসলামের বাড়ি। তিনি সীতাকুণ্ড স্টেশনে ফায়ার ফাইটার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
রবিউলের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় মা ফাইমা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৮টায় আমার ছেলে ফোন দিয়ে জানায় সীতাকুণ্ডে একটা কারখানায় আগুন লেগেছে। আমি ডিউটিতে যাচ্ছি, দোয়া কইরো। এটাই ছিল তার সঙ্গে আমার শেষ কথা। ওই রাতে শহরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। রাতে ছেলের সঙ্গে কথা হয়নি। ভোর ৫টার দিকে ছেলেকে ফোন দিলে ফায়ার স্টেশন অফিসে যে ডিউটিতে ছিল সে রিসিভ করে। ওই লোক জানান, রবিউল ডিউটিতে গেছে, তার জন্য দোয়া করবেন। পরে রবিবার (৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে বাসায় এসে টেলিভিশন চালু করে দেখি আগুনের সংবাদ। অনেক লোক মারা গেছে, এই বলে কথা শেষ করতে পারেন না ফাইমা খাতুন, ফুপিয়ে কেঁদে ওঠেন।
তিনি আরও জানান, রবিবার সকালে টেলিভিশনে সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে হতাহতের খবর দেখে রবিউলের সঙ্গে তার এক বন্ধু যোগাযোগের চেষ্টা করে। পরে ফোনে তাকে না পেয়ে রবিউলের বাবা খাদেমুল ইসলামকে ফোন দেন। ছেলের বন্ধুর কাছ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার খবর শুনে ছেলের মুঠোফোনে ফোন দিলে সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের এক সহকর্মী কল রিসিভ করেন। পরে তিনি জানান, রাতে আগুন নেভানোর সময় বিস্ফোরণের পর থেকে রবিউলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
রবিউল ইসলামের চাচা নাজিম উদ্দিন বলেন, রবিউলের খোঁজ নিতে ছোট ছেলে রনি ও প্রতিবেশী সাইদুর রহমানকে নিয়ে চট্টগ্রাম গেছেন খাদেমুল। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পুড়ে যাওয়া চারটি লাশ রয়েছে। কিন্তু লাশগুলো বাজেভাবে পুড়ে যাওয়ায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। লাশ শনাক্তের জন্য রবিউলের বাবার ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।