ইউক্রেনের লিভিভে শহর। বেজে চলেছে বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন। রাজধানী কিয়েভে চলছে ৩৫ ঘণ্টার কারফিউ। এরমধ্যেই মুহুর্মুহু হামলা হচ্ছে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায়। ঘটছে হতাহতের ঘটনা।
জীবন বাঁচাতে ২০ দিনে দেশ ছেড়েছে ত্রিশ লাখের বেশি মানুষ, জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-এইচসিআর। এছাড়া, প্রতিদিন ৭০ হাজার শিশু শরণার্থী হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইউক্রেন ছেড়ে শুধু পোল্যান্ডেই আশ্রয় নিয়েছে ১৮ লাখ মানুষ। এছাড়া তিন লাখের বেশি পাড়ি জমিয়েছে পশ্চিম ইউরোপে। মঙ্গলবারও মারিওপোল ও সামি থেকে মানবিক করিডোর ব্যবহার করে প্রায় ৩০ হাজার মানুষকে সরানো সম্ভব হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার রুশ হামলায় নিহত হয়েছেন ফক্স নিউজের দুই সাংবাদিক।
এদিকে, হামলা প্রতিহত করার দাবিও করছে ইউক্রেন। খেরসন বিমানবন্দরে রাশিয়ার তিনটি সামরিক বিমান ধ্বংসের পাশাপাশি এক উধ্বর্তন রুশ জেনারেলকে হত্যার দাবি করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বিভাগ।
সামরিক অভিযানে ইউক্রেনে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ও বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে যুদ্ধাপরাধী আখ্যা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট। মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ পার্টির দলনেতা চাক শুমার বলেন, ‘এ কক্ষের ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান আমরা সবাই এটা বলতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি যে, ইউক্রেনের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হওয়া থেকে রেহাই পেতে পারেন না পুতিন।’
প্রতিবেদনে জানানো হয়, পুতিনের বিষয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বিরল ঐক্য দেখা গেল ব্যাপকভাবে বিভক্ত কংগ্রেসে। এ সময় পুতিনকে যুদ্ধপরাধী আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি ইউক্রেন আক্রমণের বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্টর সিদ্ধান্তের তদন্ত করতে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়েছে।
রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। এতে সায় দেন ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতারাও।
লিন্ডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমাদেরকে এখন ব্রিটেনসহ অন্য মিত্রদেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে একটি সেল গঠন করতে হবে। এর মাধ্যমে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী যে যুদ্ধাপরাধে জড়িত সেটি মানুষের পৌঁছে দিতে হবে এবং (যুদ্ধপরাধে জড়িত) রুশ কমান্ডারদের নাম প্রকাশ্যে আনতে হবে।’
দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) ও প্রতিবেশী লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিককে (এলপিআর) রক্ষার কথা বলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ অভিযানের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ২০১৪ সালে কিয়েভে সামরিক অভ্যুত্থানের পর ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয় অঞ্চল দুটি।
হামলার যুক্তি হিসেবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, দেশটি চায় ইউক্রেনের ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।
এছাড়া ইউক্রেন আক্রমণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের প্রতিও আহ্বান জানানো হয়েছে।