সরকারগুলোর পরনির্ভরশীলতার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে হিসেবে আমাদেরকে নিজের পায়ে চলতে হবে। নিজেদের অর্থায়নে কাজ করতে হবে। সেজন্য বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল গঠন করলাম। আমরা আমাদের দেশকে উন্নত করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য। আর সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজ করার দরকার আছে।’
আজ সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে এই তহবিল থেকে পায়রা বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ও মেইনটেনেন্স ড্রেজিং শীর্ষক স্কিমে অর্থায়নের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বারবার অন্যের কাছে হাত পাতা, আর ধার না করে নিজেদের অর্থ দিয়ে নিজেদের অব্কাঠোমো উন্নয়ন করা এবং যারা বিনিয়োগ করতে আসবে তাদের ঋণ নেবার বিষয়টি আমরা নিজেদের অর্থ থেকে ব্যয় করতে পারি। তাতে দেশেরও লাভ, আমাদেরও আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। আমরা যে পারি, বিশ্বের কাছে দেখাতে পারি।’
‘আওয়ামী লীগের চিন্তা হলো স্বাবলম্বী হয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলা। গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত মানুষকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে আমাদের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়ে। তবে এখানে অনেককে আমরা হারিয়েছি। সাথে সাথে এই কারোনায় আমরা আরেকটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি, আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে, রেমিটেন্স বৃদ্ধি পেয়েছে। এই রিজার্ভের টাকা কিভাবে উন্নয়নে ব্যয় করতে পারি, সেটাই চিন্তা করছি।’
‘আমাদের ৬ মাসের আমদানির টাকাটা রাখতে হবে। দুর্যোগ-দুর্বিপাকের দেশ। যেকোনো সংকটে খাদ্য ক্রয় যেন করতে পারি। ছয় মাসের টাকা রিজার্ভে রেখে বাকি টাকা বিনিয়োগ করতে পারি। এজন্য আমরা নিজস্ব তহবিল গঠন করার চিন্তা করেছি। এ থেকে বিনিয়োগকারীরা ঋণ নিতে পারবে। আর অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ করব।’
তিনি বলেন, ‘পায়রা বন্দর আমি নিজেই করছি। মোংলা বন্দর চালু করেছি। মহেশখালীর মাতারবাড়ি বন্দর তৈরি হয়ে গেছে। সেটা আরও উন্নত হবে। আমাদের একটা গভীর সমুদ্র বন্দরও করতে হবে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের কতগুলো সুবিধা রয়েছে। ভারত, নেপাল ও ভুটানকে বন্দরগুলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছি। আরও অনেক দেশও ব্যবহার করতে পারবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমাদের দেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। অনেকে বলেন, ম্যাজিকটা কী? আমি বলি, এটা কোনো ম্যাজিক নয়। ম্যাজিকটা হচ্ছে, দেশপ্রেম। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ।