এক দশকে ৩শ’ ৮৬জন বাংলাদেশি সীমান্তে হত্যার শিকার হয়েছেন। বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। আর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম মনে করেন অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়া বন্ধ হলেই সীমান্ত হত্যা কমে আসবে।
বাংলাদেশের ৫১৩৮ কিলোমিটার সীমান্তের ৪৮২৭ কিলোমিটার স্থলে। এর ৪১৪৪ কিলোমিটারই ভারতের সঙ্গে। সীমান্তে চোরাচালান, অবৈধভাবে পারাপারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা লেগেই থাকে। আর এসব নিয়ন্ত্রণে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে হত্যার মতো ঘটনাও ঘটে থাকে।
বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে গেল এক দশকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৩৮৬জন বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন। আর তার আগের দশকে এ সংখ্যা ছিল ৮৬৫জন। তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধেই আনা হয় বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি’র মহাপরিচালক মনে করেন, অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার বন্ধ হলেই সীমান্ত হত্যার মতো ঘটনা ঘটবে না। জানালেন, নজরদারি জোরদার করতে অরক্ষিত সীমান্তের পাশে সড়ক বানানো হচ্ছে।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে বসবাসকারীদের সচেতন হতে হবে যাতে করে তারা অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়ে অন্য কোন দেশে প্রবেশ না করে। তাহলে এ সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে। শুধু কাঁটাতারের সীমান্ত আর ড্রোন দিয়ে দেখলেই কাজ হবে না। আমাদের ঘটনাস্থলে গিয়ে তা প্রতিহত করতে হবে। এর পূর্বশর্ত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের সীমান্তে আমাদের সরব থাকতে হবে। বর্তমান সরকার সীমান্ত সড়ক তৈরির পদক্ষেপ নিয়েছে এবং অনেক অংশের কাজ হয়ে উঠেছে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যমে সীমান্তে হত্যার মতো ঘটনা থামানো সম্ভব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তৌহিদুল হক বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের জায়গাটা আমরা যতটা না কূটনৈতিক বা প্রশাসনিকভাবে পরিমাপ করি তার চাইতে আবেগী সম্পর্কে বেশি পরিমাপ করি। ভারত থেকে কেউ যদি নিয়ম না মেনে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চায় বা বাংলাদেশে থেকে কেউ নিয়ম না মেনে ভারতে প্রবেশ করতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে হত্যা করতে হবে এই মানসিকতাটা দুই দেশের সীমান্ত রক্ষায় যারা দায়িত্বে আছে তাদের দূর করতে হবে।
ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মানবিক হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।