গত বেশ কয়েকদিন ধরেই হু হু করে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। পরীক্ষার তুলনায় গত এক সপ্তাহ ধরে সনাক্তের হার ৪০ শতাংশের বেশি। এরই মধ্যে ‘প্রবাসী বাবার স্বপ্ন পূরণে’ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের জোড্ডা ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ব্যবসায়ী জাকির হোসেন ঢাকঢোল পিটিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছেন। কনে একই ইউনিয়নের ধামুরপাড়া গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের মেয়ে ফারজানা আক্তার আখি।
গতকাল বুধবার দুপুরে জাকির হোসেন তার বোন, ভগ্নিপতি, ভাই ও মা-বাবাকে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যান। গ্রামে হেলিকপ্টার দেখে সরকারের দেওয়া বিধি-নিষেধ অমান্য করে সেখানে শত শত উৎসুক নারী-পুরুষ ভিড় করেন। বর জাকির হোসেন নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কুয়েত প্রবাসী জালাল আহাম্মেদের ছেলে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস জানায়, বুধবার বিকেল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৪১। শনাক্তের হার ৪৩ শতাংশ। এর মধ্যে ওই উপজেলার ১২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বিধি-নিষেধ ভেঙে হেলিকপ্টারে বিয়ে হলেও স্থানীয় প্রশাসনের দাবি-তারা এ বিষয়ে কিছুই জানতেন না।
এ প্রসঙ্গে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক হোসেন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে আমার কাছে বিয়ের আগে এসেছিল। আমি তাদের নিষেধ করেছি- এখন হেলিকপ্টার আনা যাবে না। তারপরও তারা এই কাজ কেন করেছেন, সেটা আমি জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লামইয়া সাইফুল জানান, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের বিধি-নিষেধ চলছে। হেলিকপ্টারে বিয়ের বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। সরকারি নির্দেশনা অমান্য করলে খোঁজ নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানায়, স্থানীয় ভোগই বাজারে বর জাকিরের হার্ডওয়ারের ব্যবসা রয়েছে। এ ছাড়াও তিনি মৎস্য ব্যবসায়ী। তার প্রবাসী বাবা ছেলেকে হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করতে যেতে বলেন। বাবার এমন স্বপ্ন পূরণ করতেই হেলিকপ্টার নিয়ে বিয়ে করার উদ্যোগ নেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জাকিরের বাবা জালাল হোসেন বলেন, আসলে বিধি-নিষেধের আগেই বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তাই বাধ্য হয়ে করতে হয়েছে। জাকির যখন ছোট ছিল তখন থেকে আমার স্বপ্ন, তাকে হেলিকপ্টারে চড়িয়ে বিয়ে করাব। সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই এই আয়োজন। আমরা চেষ্টা করেছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন করতে।
বর জাকির হোসেন জানান, বাবার দীর্ঘদিনের ইচ্ছে পূরণ করতে রাজধানী থেকে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ভাড়া করে হেলিকপ্টার আনি। আমরা কিছু মানুষ দাওয়াত দিয়েছিলাম।