শুরু হতে যাচ্ছে অমর একুশে বইমেলা-২০২১। করোনা পরিস্থিতির কারণে ১ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে মেলা শুরু হবে ১৮ মার্চ। এবারের মেলায় থাকছে চমৎকারিত্ব। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবার আরও বড় পরিসরে বইমেলা হবে।
গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের অমর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাড়ে সাত লাখ বর্গফুট জায়গা জুড়ে। এই আয়তনটি ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ মিলিয়ে। এবার দুই প্রাঙ্গণ মিলে মেলার পরিসর হবে প্রায় আট লাখ বর্গফুট এলাকা জুড়ে। এ প্রসঙ্গে অমর একুশে বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, এবারের বইমেলার পরিসর গতবারের চেয়ে বেশি। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব দিকের অংশে আরও সম্প্রসারিত হচ্ছে মেলা।
মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশ ঘুরে দেখা যায়, এর পূর্ব দিকের অংশে আরও অনেকখানি জায়গা জুড়ে স্টল নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে কাঠামো নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে।
বাংলা একাডেমির একটি সূত্র জানায়, এবারের মেলায় ৫৭০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। সব মিলিয়ে মেলায় স্টলের ইউনিট দাঁড়াবে আট শতাধিক। মোট প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৪টি। আগামী ৭ অথবা ৮ মার্চ স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দের জন্য লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লটারি অনুযায়ী প্রকাশকদের মধ্যে প্যাভিলিয়ন ও স্টল বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এবারের অমর একুশে বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে মার্চ ও এপ্রিল মাস জুড়ে। এই সময়টি ঝড়-বাদলের। সে কথা মাথায় রেখেই এবার মেলায় বেশ কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র রাখা হচ্ছে। যাতে বৃষ্টি বা ঝড় শুরু হলে মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারে। বৃষ্টি বা ঝড় না থাকলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো মোড়ক উন্মোচনের স্থান ও লেখক আড্ডার জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হবে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বইমেলার থিম ‘হে স্বাধীনতা’। গত কয়েকবারের মতো এবারও মেলার সার্বিক ডিজাইনটি করেছেন নির্মাতা ও স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর। তিনি এবারের থিম ও মেলার ডিজাইন নিয়ে যুগান্তরকে বলেন, স্বাধীনতা আমাদের, এ দেশের মানুষের। সেই সর্বজনীন অনুভূতি এবারের থিম। এটা যেহেতু চিন্তার মেলা, মননের মেলা- সেহেতু স্বাধীনতার স্তম্ভটিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার স্তম্ভ ও পাঁচটি দশককে পাঁচটি আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হবে মেলায়। মানুষ যেন নিজেই সেখানে এসে স্বাধীনতাটাকে উপলব্ধি করে নেয়।
তিনি বলেন, এবার বাস্তবতা অন্যরকম। মেলা এবার ফেব্রুয়ারি নয়, মার্চে হচ্ছে। গরম থাকবে, ঝড়-বৃষ্টি হতে পারে। আছে করোনার ভয়। এই বিয়গুলোর সঙ্গে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। তাই এবার অলংকরণের চাইতে ডিজাইনে মনোযোগ দিয়েছি। কারণ এবার ব্যবস্থাপনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কাঠামো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বৃষ্টি হলে মানুষ যেন ছাউনি পায়। ব্যবস্থাপনাগুলো কীভাবে হবে সেটা চিন্তা করে ডিজাইন করা হয়েছে। মানুষ যেন স্বাচ্ছন্দ্যে মেলায় ঘুরতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের অংশ দিয়ে মেলায় প্রবেশ করা যাবে।