ধর্ষণে ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন এক তরুণী (১৮)। টাকার বিনিময়ে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ভুক্তভোগী তরুণীর পরিবার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে রাজি না হওয়ায় হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নেত্রকোনার মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের শিবপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী তরুণীর পরিবার ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, শিবপাশা গ্রামের শামীম চৌধুরীর ছেলে সাব্বির চৌধুরীর (১৯) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই তরুণীর। বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে সাব্বির। একপর্যায়ে তরুণীর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটলে বিষয়টি নজরে আসে তরুণীর পরিবারের লোকজনের। পরে পরিবারের লোকজন ডাক্তারি পরীক্ষা করে জানতে পারেন ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণী। এ ঘটনা সাব্বিরের পরিবারের লোকজনকে জানানো হলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় সাব্বির। ঘটনাটি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাব্বিরের পরিবারের লোকজন। এর সঙ্গে ওই তরুণীকে হত্যার হুমকিসহ গর্ভের সন্তান নষ্ট করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী তরুণী বলেন, বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে সাব্বির। বর্তমানে আমি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য সাব্বির ও তার পরিবারের লোকজন চাপ দিয়ে যাচ্ছে। তারা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমি এর বিচার চাই।
ভুক্তভোগী তরুণীর মা বলেন, আমরা গরিব মানুষ। সাব্বিরের পরিবার প্রভাবশালী। আমার মেয়েটাকে ধর্ষণ করায় সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টগুলো তারা নিয়ে যেতে চায়। ৩-৪ লাখ টাকার বিনিময়ে আমার মেয়ের গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। এতে রাজি না হলে গাড়িচাপা দিয়ে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে সাব্বিরের দাদা মুজিবুর চৌধুরী। আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করার চেষ্টা করছি।
সাব্বিরের বাবা শামীম চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর আমার ছেলে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। বিষয়টি সমাধান করার জন্য আমার চাচা মুজিবুর চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে মেয়েটির গর্ভে যে সন্তান রয়েছে তা আমার ছেলে সাব্বিরের না।
জানতে চাইলে সাব্বিরের দাদা মুজিবুর চৌধুরী জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিল। শুনেছি মেয়েটি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ছেলেপক্ষ টাকা-পয়সা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসা করতে চায়। মেয়েটিকে গাড়িচাপা দিয়ে মেরে ফেলার কোনো ধরনের হুমকি দেওয়া হয়নি বলে তিনি জানান।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাইনি।