রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন

শোক দিবসে হাজারো স্বেচ্ছাসেবীর অংশগ্রহণে কোয়ান্টামের দাফন করসেবা

Taj Afridi
  • Update Time : রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১

১৫ আগস্ট রবিবার রাজধানীর কাকরাইলস্থ ওয়াইএমসিএ ভবনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কার্যক্রমে অংশ নেন এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবী।

 

কাকরাইলে কোয়ান্টামের দাফন ক্যাম্প কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মরদেহের জন্যে কেউ কাফনের কাপড় কাটছেন, কেউ আতর-সুরমা প্যাকেট করছেন। কেউ বডিব্যাগ প্রস্তুত করছেন, কেউ আবার পিপিই গোচ্ছাচ্ছেন। এভাবেই কর্পূর, তুলা, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস প্যাকেটে ভরে প্রস্তুত হচ্ছে একেকটি প্যাকেট। সঙ্ঘবদ্ধভাবে হাত ঘুরে ঘুরে সেগুলো চলে যাচ্ছে গোসলখানা বা হাম্মামখানার স্টোরে। দাফনকর্মীরা সেখান থেকে একেকটি প্যাকেট ব্যবহার করেন একেকজন মরদেহের জন্যে। এভাবেই হাম্মামের ভেতরে সহজেই সরঞ্জামগুলো ব্যবহার করতে মরদেহ ও দাফনকর্মীদের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ করসেবার আয়োজন। পাশাপাশি কাপড় কাটাসহ বডিব্যাগ প্রস্তুতির প্রশিক্ষণে অংশ নেন তারা।

 

জানা যায়, ২০২০ সালে করোনার শুরু থেকে গতকাল শনিবার ১৩ আগস্ট পর্যন্ত ৫ হাজার ৭২০ জনেরও বেশি মরদেহের শেষযাত্রায় সঙ্গী হয়েছেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৫০৪০ জন, সনাতন ৬০৮ জন, বৌদ্ধ ধর্মের ৩১ জন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ৪১ জন। ২০২১ সালের শুরু থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতে এ সংখ্যা ২৭৫০ জন। এর মধ্যে মুসলিম ২৫৮২, সনাতন ১৪৭, বৌদ্ধ ৩ জন এবং খ্রিষ্টান ধর্মের রয়েছে ১৮ জন।

 

রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের ইনচার্জ খন্দকার সজিবুল ইসলাম জানান, জাতীয় এই শোক দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানাই। শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে বাঙালি হিসেবে জাতির যে কোনো দুর্যোগে কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা প্রস্তুত। শোক দিবস উপলক্ষে আজ এক হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাকর্মীরা এসেছেন। কোয়ান্টাম পরিবারের বিভিন্ন পেশার এই সদস্যরা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে সফল করবেন সারাদিনের এ করসেবা।

 

সজিবুল ইসলাম আরো জানান, গত বছর ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনার শুরু থেকেই করোনা বা করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছে কোয়ান্টাম। স্বপরিকল্পনা, স্বঅর্থায়ন আর স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে এ দাফন সেবা। সব মিলিয়ে শুধু রাজধানীতে দাফন সেবায় সরাসরি জড়িত রয়েছেন দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। সারা দেশে এ সংখ্যা প্রায় ১৫শরও বেশি। এসব স্বেচ্ছাকর্মীদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ গৃহিনী, কেউ শিক্ষক, কেউ সাংবাদিক, কেউ ব্যবসায়ী কেউ আবার আইনজীবী। নানান পেশার নানান বয়সী স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকায় রয়েছেন আলাদা মহিলা স্বেচ্ছাসেবীরা। মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যে রয়েছে স্ব স্ব ধর্মের পৃথক দল। মমতার পরশে মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসেন প্রতিষ্ঠানটির এই স্বেচ্ছাকর্মীরা।

 

যথাযথ ধর্মীয় রীতি মেনে চলছে কোয়ান্টামের দাফন সেবা। হাসপাতাল ছাড়াও কাকরাইলে নিজস্ব গোসলখানায় ভাইরাসমুক্ত করে যথাযথভাবে শেষ সজ্জায় সাজিয়ে প্রয়োজনে কবরস্থান বা সমাধি পর্যন্ত ছুটে চলেছেন তারা। প্রসঙ্গত, রক্তদানসহ কোয়ান্টামের বহুমুখী সেবার মধ্যে ২০০৪ সালে রাজশাহীতে বেওয়ারিশ লাশ দাফনের মধ্যদিয়ে চালু হয় দাফন কার্যক্রম।

 

করোনা দাফন কাজে সুরক্ষার জন্যে ব্যবহৃত হয় কয়েক ধরনের জীবাণুনাশক। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী চলছে করোনাকালীন দাফন কার্যক্রম। পাশাপাশি সাধারণ মরদেহ গোসলেরও ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। দিনে বা রাতে ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়ার জন্যে প্রস্তুত রয়েছেন কর্মীরা। মৃতের শেষ বিদায়ে আপনজনের মতই মমতার পরশে যথাযথ সম্মান জানিয়ে যাচ্ছেন নিবেদিতপ্রাণ এই স্বেচ্ছাসেবীরা। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টামের স্বেচ্ছাকর্মীরা।

এইচ বিডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর এ আপনাকে স্বাগতম। “সময়ের প্রয়োজনে- HBD NEWS24” নিয়ে আমরা আছি আপনার পাশে। আপনার পাশে ঘটে যাওয়া নানা সংগতি, অসংগতি আর তথ্য নিয়ে আপনিও যোগ দিন HBD NEWS 24 এ আমাদের কাছে মেইল করুন: hbdnews24@yahoo.com

More News Of This Category

© All rights reserved © 2012 HBDNEWS24

POWERED BY MH GROUP OF COMPANY.