গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপি (২ জুন) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
লিপির মামাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার জুয়েল বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার (২ জুন) মধ্যরাতে কলাবাগান থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
রমনা নিউ মার্কেট-জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফারুকুজ্জামান বলেন, নিহত চিকিৎসক ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির মামাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার জুয়েল মঙ্গলবার মধ্যরাতে বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় মামলাটি করেন। তবে মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলাটি করা হয়।
গত সোমবার (৩১ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানের ফার্স্ট লেনের ৫০/১ তারেস ডি ক্যাসল অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলার ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে ডা. সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কনসালট্যান্ট (সনোলজিস্ট) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই ঘটনাস্থলে যায় সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট। ক্রাইম সিন জানায়, সাবিরাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের পরই সাবিরার তোশকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে দাহ্য পদার্থ না থাকায় আগুন তেমন ছড়াতে পারেনি। তার পরও সাবিরার দেহের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘ধারালো অস্ত্র দিয়ে সাবিরার শ্বাসনালি কেটে ফেলা হয়েছে। তাঁর দেহে রক্ত ও পোড়া ক্ষত ছিল। আমরা নিশ্চিত, এটি হত্যাকাণ্ড। আলামত দেখে মনে হয়েছে, মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত যেকোনো সময় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক বলেন, কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের বাড়ির ওই ফ্ল্যাটে ডা. সাবিরা ভাড়া থাকতেন। এক তরুণীকে তিনি ফ্ল্যাটের দুটি রুম সাবলেট দেন। গতকাল সকালে সাবলেটের ওই তরুণী কানিজ সুবর্ণা হাঁটতে বের হয়েছিলেন। বাসায় ফিরে তিনি দেখেন সাবিরার রুম বন্ধ। তবে রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি বাড়ির কেয়ারটেকারকে ডেকে চাবি এনে রুমের তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক সাবিরা বিছানায় উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। ঘরে আগুন লেগেছে ভেবে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে আগুন নেভানোর পর দেখে সাবিরা মৃত এবং তাঁর শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ডিবি পুলিশ এসে সাবিরার গলায় একটি আঘাতের চিহ্ন এবং পিঠে দুটি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়।