তারা বলছেন, বিলুপ্তপ্রায় সব মাছকে গ্রাম বাংলার খাল-বিলে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ।
একসময় প্রাকৃতিক জলাশয়ে মলা, ঢেলা, পুঁটি, টেংরাসহ নানা প্রজাতির ছোট মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু বিগত কয়েক দশকে জনসংখ্যা বাড়া, জলাশয় সংকোচন, কৃষিকাজে কীটনাশকের যথেচ্ছা ব্যবহার, পানিদূষণের কারণে প্রাকৃতিক জলাশয়ে এসব মাছ বিলুপ্তির পথে।
বিলুপ্তপ্রায় ২৪ প্রজাতি মাছের ওপর গবেষণা করে পোনা উৎপাদনে সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ঢেলা মাছের প্রজনন কৌশল, পোনা উৎপাদন ও চাষাবাদ-প্রযুক্তি উদ্ভাবনেও সফল হয়েছেন তারা। আগামী মৌসুমে এই মাছ চাষী পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হবে বলে জানান তারা।
বিলুপ্তপ্রায় ২৪ প্রজাতি মাছগুলো হলো- পাবদা, গুলশা, টেংরা, শিং, মাগুর, গুজি আইড়,চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, রাজপুঁটি, মেনি, বালাচাটা, গুতুম, কুঁচিয়া, ভাগনা, খলিশা, বাটা, দেশি সরপুঁটি, কালিবাউশ, কই, গজার, গনিয়া ও ঢেলা মাছ।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. সেলিনা ইয়াসমিন বলেন,’প্রাকৃতিক উৎস যেমন বিভিন্ন নদী থেকে পোনা সংগ্রহ করে আমরা আমাদের সাধু পানির কেন্দ্রে নিয়ে আসি। এরপর আমরা এগুলোকে মা মাছ হিসেবে বড় করি এবং এপ্রিল মাসে এগুলোর কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করি।’
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক এএইচএম কোহিনুর বলেন,’আগামীতে কিভাবে প্রডাকশন করতে পারবো, সেটা নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালা করবো। এই পোনা আমরা চাষিদের জন্য সহজলভ্য করতে যে সকল কার্যক্রম আছে সেগুলো পরিচালনা করবো।’
বিলুপ্তপ্রায় মাছ ফিরিয়ে এনে গ্রামীণ মানুষের পুষ্টির জোগাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে এই ইন্সটিটিউট। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান,’আমাদের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছ দেশি মাছকে পুনরুদ্ধার করা।’
ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে ২০০৮-০৯ সালে দেশে ছোট মাছের উৎপাদন ছিল মাত্র ৬৭ হাজার মেট্রিক টন, এখন আড়াই লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি ছোট মাছ উৎপাদন হচ্ছে। এই কেন্দ্র ছাড়াও বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রে বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।