আমার বিরুদ্ধে হয়তো অনেকের অনেক রকমের অভিযোগ রয়েছে, আমি তাদের সেই সব অভিযোগের প্রতি উত্তরে যাবো না বা চেষ্টাও করব না। কারণ দিন শেষে প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজেকে পারফর্ম দিয়ে প্রমাণ দেন। চলচ্চিত্র মাঠে আমিও একজন খেলোয়াড়’- এভাবেই নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব পদপ্রার্থী শাহীন সুমন।
প্রচার বিমুখ হিসেবে পরিচিত শাহীন সুমন বলেন, এফডিসিতে অসংখ্য অভুক্ত মানুষের হাহাকার আমি দেখেছি। এ ভাবনায় উত্তরণে কত রাত নির্ঘুম কেটেছে তার হিসেব নেই। কত রাত আমার সহকর্মী পরিচালক, অন্যান্য কুশলীদের বেকারত্বে কেঁদেছি সে কথা নিজেও জানি না। খুব ঘনিষ্ঠজনরা ছাড়া সে কথা কাউকে জানতেও দেইনি। বিশ্বাস করুন এই ইন্ডাস্ট্রি ব্যস্ত থাকবে সেজন্য সরকার সব করছে কিন্তু আমরা ব্যস্ত হবার জন্য যা দরকার তা করতে পারছিলাম না। দরকার ছিলো অনেক অনেক ছবি করার মানসিকতার প্রযোজক। মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া সেলিম খানের মতো একজন নিবেদিত প্রাণ প্রযোজক আমার সেই কান্নাভেজানো সময়ের সাক্ষী হয়ে আমার সহকর্মীদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এখন মানুষ অনেক কর্মব্যস্ত। এরচেয়ে ভালো দৃশ্য আর কি হতে পারে?’
কিন্তু এই দৃশ্য কি থমকে যাবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা যদি এভাবে বলেন নির্বাচনে জয়-পরাজয় ব্যস্ততার চিত্রপট বদলাবে কিনা তাহলে আমি বলবো এই বিবেচনায় সেটার সম্ভাবনা নেই।
এটা আপনার নির্বাচনে জয়ী হবার কৌশল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে শাহীন বলেন, “দেখুন আমি এখন যা নির্বাচনের পরেও তাই থাকবো, আমার একথা আমাকে যারা অপছন্দ করেন তারাও জানেন শাহীন কথা দিলে কথা রাখতে সবকিছুই করবে। আমি সহকর্মীদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। নির্বাচনে জেতা না জেতায় কিছু আসে যায় না। কারণ কারণ ইন্ডাস্ট্রি আমাকে দিয়েছে, তাই মনে হয়েছে এখন আমার দেবার পালা।”
এফডিসিপাড়া ঘুরে শাহীন সুমনের এমন কথার পক্ষে জোড়ালো যুক্তিও পাওয়া গেলো এফডিসি ঘরানার বলে পরিচিত ডাকসাইটে অতি সিনিয়র ছাড়াও এ প্রজন্মের নির্মাতাদের কথায়। তাদের ভাষ্য, তিনি (শাহীন সুমন) অসাধ্য সাধন করেছেন। সবাই যেখানে এফডিসিকে কর্মমুখর করতে এটা করতে হবে সেটা করতে হবে বলে মুখে ফেনা তুলছেন, তিনি সেখানে কাজটা বড় পরিসরে সকলকে নিয়ে উদ্যোগী হলেন এবং সফল হতে রাতদিন পরিশ্রম করছেন। তিনি যে গুরুত্বপূর্ণ একটা পদে দাঁড়িয়েছেন এনিয়ে সময় নষ্ট না করে সহকর্মীদের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করে চলছেন, তিনি চাইলে নিজেই অনেকগুলো ছবি করতে পারতেন কিন্তু করেন নি। এই হচ্ছেন শাহীন সুমন। সহকর্মীদের কাছে আস্থার নাম। শুরুতে যেমন ছিলেন এখনও তাই।
এখানেই থেমে নেই তার গুণকীর্তন। প্রদর্শকরা চায় প্রযোজক-পরিচালকরা অনেক অনেক ছবি বানাবে। শাহীন সুমনের এমন উদ্যোগে তাই দেশের সব প্রান্ত থেকে হল মালিকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য শাহীনের মতো উদ্যোমী নেতা নিয়ে ভবিষ্যতে ঐক্যবদ্ধভাবে পথ চলতে তাদেরও সুবিধা হবে।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম ব্যস্ত নির্মাতা শাহীন সুমন। ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রিতে চড়াই-উৎড়াইয়ের মাঝেও তিনি এগিয়ে চলছেন কেবল কর্মগুণে। ডাকসাইটের পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে নিয়ে এবারে প্যানেল গড়েছেন। তিনি লড়বেন সাধারণ সম্পাদক পদে। আগামী ২ এপ্রিল এফডিসিতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।