মোঃএনামুল হক পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪২ তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও আনন্দ র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৭ মে) বিকেল থেকে রাত পযর্ন্ত পঞ্চগড় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মামুনুর রশিদ লায়ন এর উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর দর্শনে শেখ হাসিনার পথচলা’ শীর্ষক আলোচনা সভা আনন্দ র্যালী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগেৱ সাধারণ সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা পরিষদের প্রশাসক , আলহাজ্ব মো: আনোয়ার সাদাত সম্রাট , উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও দলীয় এ কাজের জন্য জেলার বাইরে থাকায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন । এ সময় আরো উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, মনিরা পারভীন , সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগ ও চেয়ারম্যান জাতীয় মহিলা সংস্থা পঞ্চগড় জেলা শাখা । দীপেন চন্দ্র বর্মন , সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগ । সাজেদুর রহমান , সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক , পঞ্চগড় জেলা আওয়ামীলীগ । মোঃ শহিদুল ইসলাম , আহবায়ক, পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী যুবলীগ । রবিউল ইসলাম চানু , যুগ্ন আহবায়ক , পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী যুবলীগ । মামুনুর রশিদ লায়ন, সভাপতি আওয়ামী যুবলীগ সদর উপজেলা ও উপদেষ্টা জাতীয় শ্রমিক লীগ পঞ্চগড় জেলা শাখা । এস এম হুমায়ুন কবির উজ্জ্বল, সাধারণ সম্পাদক, পৌর আওয়ামীলীগ । শাহীন রেজা মিয়া আহবায়ক, জাতীয় শ্রমিক লীগ ,পঞ্চগড় জেলা শাখা। মো: নুরুজ্জামান, সদস্য সচিব , জাতীয় শ্রমিক লীগ , পঞ্চগড় জেলা শাখা । এবং পঞ্চগড় উপজেলার আওয়ামী যুবলীগের সকল নেতৃবৃন্দরা এসময় উপস্থিত ছিলেন । এ সময় , পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার সাদাত সম্রাট ভিডিও কনফারেন্স অনে বলেছেন , ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে বিদেশে থাকার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের সময় সৌভাগ্যক্রমে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহেনা প্রাণে বেঁচে যান। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যাযাবর জীবন কাটিয়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী প্রায় ৬ বছর পর ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বাংলার জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন ও অসীম আস্থার কারণে তিনি বার বার দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিস্ময়কর অবদান রেখে চলছেন।’ মামুনুর রশিদ লায়ন বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছরের নির্বাসনজীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের এই দিনে তিনি দেশের মাটিতে ফিরে আসেন। তাকে বহনকারী উড়োজাহাজটি সেদিন বিকেলে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তত্কালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। এ সময় সারা দেশ থেকে আসা লাখো মানুষ তাঁকে স্বাগত জানায়, ভালোবাসায় সিক্ত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা। হুমায়ুন কবির উজ্জ্বল বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নরঘাতকরা ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। এ সময় বিদেশে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। এ হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতকগোষ্ঠী। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমনি ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫, ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতকগোষ্ঠী। তাই এ সময় শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন শেষে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে প্রিয় স্বদেশ ভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়।দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে গতিরোধ করতে পারেনি সেদিন। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা বাংলাদেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। সদস্য সচিব মোঃ নুরুজ্জামান
বলেন, ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার নিরবচ্ছিন্ন দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে চলে তার একটানা অকুতোভয় সংগ্রাম। জেল-জুলুম, অত্যাচার কোনোকিছুই তাকে তার পথ থেকে টলাতে পারেনি। শত প্রতিকূলতায়ও তিনি হতোদ্যম হননি কখনো। বাংলার মানুষের হারিয়ে যাওয়া অধিকার পুনরুদ্ধার করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি বারবার স্বৈরাচারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করেছেন, আবির্ভূত হয়েছেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা রূপে। আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করা হয়।
মোঃএনামুল হক
পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি