নতজানু, ভঙ্গুর এবং পর নির্ভর একটি রাজনৈতিক দল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, তারা জনগণের কাছে যায় না, যায় বিদেশিদের কাছে আর বিদেশি দূতাবাসের কাছে। ক্ষমতায় বিদেশিরা বসাবে না, ক্ষমতায় বসাবে এদেশের জনগণ।
ওবায়দুল কাদের আজ বুধবার সকালে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ সব মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ প্রথম দিকে অস্বীকার করলেও এখন স্বীকার করছে। এখন বলছে প্রবাসী একজন বাংলাদেশি এ কাজ করছেন।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, এই প্রবাসী বাংলাদেশি কে? তার পরিচয় কেন প্রকাশ করেন নি? বিএনপি নেতারা বলেছেন এ ধরনের কার্যক্রমে তাদের নৈতিক সমর্থন আছে এবং তারা এতে সংহতি প্রকাশ করেন, এ থেকেই সবকিছু স্পষ্ট হয়। জনগণ এসব কৌশলী জবাব কথামালার চাতুরিতে বিভ্রান্ত হয় না উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, জনগণ জানে বিএনপির আসল পরিচয়।
বিএনপি মহাসচিব ডেভেলপমেন্ট পার্টনারদের কাছে চিঠি লেখা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের ভাষায় নাকি মানবাধিকার আর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য চিঠি লিখেছেন। অন্তত চিঠি লেখার কথাতো স্বীকার করেছেন। তারা কথায় কথায় সার্বভৌমত্বের কথা বলেন, গণতন্ত্রের কথা বলেন, তবে কি বিদেশিদের কাছে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো স্বাধীন দেশের রাজনৈতিক দলের কাজ হতে পারে?
যারা জীবন্ত মানুষকে পেট্রল বোমায় পুড়িয়ে মারে, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের স্টিম রোলার চালায়, হাওয়া ভবনের নামে অনিয়ম আর লুটপাট চালায়, তারাই আজ মানবাধিকারের কথা বলে, যা শুনলে হাসি পায় বলেও দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
আন্দোলন ও নির্বাচনে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি আবার লুটপাটের নেশায় ক্ষমতায় যেতে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চায় উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটি বিএনপির মতো মেরুদণ্ডহীন এবং জনগণের সাথে সম্পর্কহীন রাজনৈতিক দলের পক্ষেই সম্ভব।
বিদেশে নাকি বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীন, ন্যায়বিচারহীন দেশ হিসেবে পরিচিত। বিএনপি নেতাদের এমন অর্থহীন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের উত্তরণ বিএনপি চোখে দেখে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে যখন উন্নয়ন ও অর্জনের রোল মডেল বলা হয় তখন বিএনপি কানে শোনে না। বিএনপি চায় এদেশ সমস্যা জর্জরিত রক্তাক্ত জনপদ হয়ে যাক, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী স্রোতধারায় চলুক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অব্যাহত অগ্রযাত্রা, তা অদম্য গতিতে এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, বাংলাদেশ আর কোনোদিন বিএনপির সেই অন্ধকার যুগে ফিরে যাবে না।
তিনি বলেন, বিদেশে বিএনপি শুধু মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে নাই। তারা এফবিআইকে ভাড়া করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে কিডন্যাপ করার ষড়যন্ত্র করেছিল। ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সন্তান ও জাতির পিতার দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘ফিজিক্যালি হার্ম’ করার পরিকল্পনা প্রমাণিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের বসবাসরত বিএনপি কর্মী রিজভী আহমেদ সিজারের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, মামলা চলাকালীন সময়ে রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে জানান যে, তিনি এবং তার সহযোগী ইয়োহানেস থেলার মিলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের অপহরণ করার উদ্দেশে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একজন এফবিআই স্পেশাল এজেন্টকে ঘুষ দেয়।
রিজভী আহমেদ সিজার আদালতে আরো জানান, এই কাজের জন্য বিএনপির হাইকমান্ড হতে সাড়ে চার কোটি টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের নথিতে যা লিপিবদ্ধ আছে।